বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে শ্রীলঙ্কা। দূর্বিষহ অবস্থা সাধারণ মানুষের৷ তাই এহেন পরিস্থিতি সামাল দিতে ১ এপ্রিল থেকেই সেদেশে সর্বজনীন জরুরি অবস্থা জারি করলেন রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপাকসে।শ্রীলঙ্কার এই তুমুল অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবি তোলেন সেদেশের মানুষ। সেই মতন বৃহস্পতিবারও তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা।
কাঁদানে গ্যাসের শেল, জলকামান ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। বৈদেশিক মুদ্রারও বিপুল অভাব দেখা দিয়েছে প্রতিবেশী দেশটিতে। পরিস্থিতি এমনই চরমে পৌঁছেছে বিদেশী মুদ্রার অভাবে জ্বালানি তেলের মতন প্রয়োজনীয় পণ্যেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ঘাটতি দেখা দিয়েছে এলপিজির ক্ষেত্রেও। এখানেই শেষ নয়, সেদেশে সারাদিনে ১৩ঘন্টা বন্ধ রাখা হচ্ছে বিদ্যুৎ পরিষেবাও।
শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রপতি রাজাপাকসের পরিবারের লোকজনই মূলত দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন। রাষ্ট্রপতির দাদা মাহিন্দা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন, ছোটো ভাই তুলসি অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর অপর আর এক দাদা কৃষিমন্ত্রী এবং ভাগ্নে নমল ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত। এদিন এই সরকারের বিরুদ্ধেই বিক্ষোভ দেখান শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ। রাষ্ট্রপতির বাড়ি ঘিরে চলে চূড়ান্ত বিক্ষোভ। ওঠে একের পর এক বিরোধী স্লোগান। তাঁদের অভিযোগ, সরকারের অব্যবস্থার কারণেই বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কট এত ভয়াবহ রকম প্রকট আকার ধারণ করেছে।
স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বড় মন্দার কবলে এই দ্বীপরাষ্ট্র। দেশের ২ কোটি নাগরিকের অবস্থাও হয়ে দাঁড়িয়েছে ভয়াবহ। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামান্যতম জিনিস টুকুও আকাল হয়ে উঠেছে দেশজুড়ে। এই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলি আমদানির জন্যও ঘাটতি দেখা দিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রায়। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে উঠেছে যে বৃহস্পতিবার বাস এবং বাণিজ্যিক যানবাহনের প্রধান জ্বালানি ডিজেল মেলেনি গোটক দেশের কোনও প্রান্তেই। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পরবর্তী কী সিদ্ধান্ত নেয় সেদেশের সরকার, সেটাই এখন দেখার।