২৪ লক্ষ টাকা দেওয়ার পরেও হয়নি চাকরি! অভিযোগ করে উল্টে ২ মাস জেল খাটলেন তৃণমূল কর্মী

বাংলাহান্ট ডেস্ক : টাকার বিনিময়ে চাকরির ফাঁদের হদিশ মিলল অনুব্রতর (Anubrata Mandal) গড়েও। তৃণমূলের বোলপুর (Bolpur) পার্টি অফিসের মধ্যেই পরিচয় হয় তিন ব্যক্তির সঙ্গে। সেই তিন ব্যক্তি প্রতিশ্রুতি দেয় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার। আর সেই প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরই তিন প্রতারককে লাখ লাখ টাকা দিয়ে ঠকলেন চারজন। অভিযোগ, ওই টাকা নিয়ে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ভুয়ো নিয়োগপত্র (Fake Recruitment Certificate)। সেই নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পরই প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরেই অভিযুক্তের কাছ থেকে সমস্ত টাকা ফেরত চান তাঁরা। কিন্তু, টাকা তো ফেরত পাননি, উলটে ৬৫ দিন জেল খাটতে হয় অভিযোগকারীদের। বিষয়টি রামপুরহাট (Rampurhat) মহকুমা শাসককে লিখিতভাবে জানান অভিযোগকারী আবু বাক্কার শেখ।

জানা যাচ্ছে, আবু বাক্কার শেখ বীরভূমের পাইকর থানার হিয়াতনগর গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৯ সালে তৃণমূলে দলে যোগ দেন তিনি। মাঝে মধ্যেই বোলপুরে তৃণমূল অফিসে যাতায়াত করতেন আবু। তৃণমূলের অফিসেই পরিচয় হয় বোলপুর থানার সিয়ান গ্রামের বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া এবং তার ছেলে গোলাম এসাহাকের সঙ্গে। তাদের মাধ্যমেই পরিচয় হয় লাভপুরের বাসিন্দা আনাই শেখের সঙ্গে। তারা তিনজনই চাকরির প্রতিশ্রুতি দেয় বলে অভিযোগ। আবু বাক্কার জানান, মোট চারজনের চাকরির জন্য ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পর মোবাইলে দুটি পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের প্যাডে এবং দুটি কলকাতা পুলিশ কমিশনারের প্যাডে লেখা নিয়োগপত্র পাঠানো হয়। কিন্তু যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায় চারটি নিয়োগপত্রই ভুয়ো।

1609199261 5fea6e9d76b33 bangla sanskriti mancha

২০২১ সালের ২১ অক্টোবর টাকা ফেরত চাইতে গেলে বোলপুর মহকুমা শাসকের কাছে ডেকে পাঠিয়ে পুলিশ দিয়ে মামা ও তাঁর দুই ভাগ্নেকে গ্রেফতার করানো হয়। দুই মাস পর জেল থেকে মুক্তি পান তাঁরা তিনজন। এরপর সব কাগজপত্র দিয়ে পাইকর থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে থানার আধিকারিকরা তাঁদের সমস্ত কাগজপত্র জমা নিলেও কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি। এরপর বাধ্য হয়ে মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান তাঁরা তিন জন।

আবু বাক্কার জানান, ‘আমি তৃণমূল পার্টি করতাম। বোলপুর পার্টি অফিসে মাঝেমধ্যেই যাতায়াত করতাম। পার্টি অফিসে অভিযুক্তদের ওঠাবসা দেখে বিশ্বাস জন্মে যায়। তাই বিশ্বাস করে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু, চাকরি তো হলোই না। টাকা ফিরতও পেলাৃ না। উলটে আমাদের জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হল। বিষয়টি শেখ ওমরকে জানাই। কিন্তু তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি। পাইকর থানাও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এবার বাধ্য হয়েই রামপুরহাট মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হলাম।’


Sudipto

সম্পর্কিত খবর