ভূমিকম্পে মারা গিয়েছে পরিবার, এখনও প্রতিদিন খুঁজতে আসে এই কুকুর! মর্মস্পর্শী ছবি আফগানিস্তানে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয় মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে দিয়েছে সব কিছুই। পাশাপাশি কেড়ে নিয়েছে আপনজনদেরও। কিন্তু তাও আশায় রয়েছে সে। একটিবার তাদের দেখার জন্য তাই প্রতিদিনই ছুটে আসে কুকুরটি। যদিও, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে পরিবারের সদস্যরা আজ পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে। এদিকে, এই মর্মস্পর্শী ছবিই সম্প্রতি কাঁদিয়েছে নেটিজনদের মন। শুধু তাই নয়, বর্তমানের স্বার্থান্বেষী দুনিয়ায় মানুষ এবং অবলা প্রাণীর এই চিরন্তন ভালবাসার সম্পর্ক দেখে আবেগাপ্লুত হয়েছেন সকলে।

আমরা সকলেই জানি, কুকুর হল অত্যন্ত প্রভুভক্ত প্রাণী। পাশাপাশি তারা বিশ্বস্তও বটে। এমনকি এর আগেও আমরা জাপানের হাচিকোকে দেখেছি। যে তার মালিকের মৃত্যুর পরেও প্রতিনিয়ত রেল স্টেশনে এসে তাঁর খোঁজ করত। কার্যত ঠিক সেই ছবি ফুটে উঠল আফগানিস্তানে। যেখানে একটি ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের পর কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে এলাকা।

কুকুরটি বাড়ির সদস্যদের খুঁজছে:
মূলত, পূর্ব আফগানিস্তানের গ্রামীণ তথা পাহাড়ি এলাকায় সম্প্রতি ঘটা ভয়াবহ ভূমিকম্পের জেরে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং হাজার হাজার জন আহতও হয়েছেন। রিখটার স্কেলে ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.১। পাশাপাশি, কার্যত ধ্বংস হয়ে যায় বহু বাড়িঘর। এমতাবস্থায়, আফগানিস্তানের এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে একটি কুকুরকে নিয়মিত তার পরিবারের সদস্যদের খুঁজতে একটি বাড়ির ধ্বংসাবশেষের কাছে বারবার ফিরে আসতে দেখা যায়।

ভূমিকম্পে নিহত পরিবারের সদস্যরা:
এদিকে, এই হৃদয়বিদারক ছবিটিই বর্তমানে ভাইরাল হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইতিমধ্যেই @SSamiraSR নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “এই কুকুরটির বাড়ির প্রত্যেকেই ভূমিকম্পে মারা গেছেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন যে, তারা ওই কুকুরটিকে নিয়ে গিয়ে খাওয়াচ্ছেন এবং যত্ন নিচ্ছেন। কিন্তু তারপরও সে ওই ভেঙে যাওয়া বাড়িতে এসে কাউকে খুঁজতে থাকে।” সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে, এই ছবিটি গায়ানের পাকতিকার ওচকি গ্রামের।

নেটিজেনদের চোখ ভিজে গিয়েছে:
স্বাভাবিকভাবেই, এই অবলা প্রাণীর এহেন ছবি দেখে চোখে জল এসেছে নেটিজেনদের। স্বজনদের খোঁজার জন্য তার এই আকুতি দেখে আবেগাপ্লুত হয়েছেন প্রত্যেকেই। পাশাপাশি, ছবিটি দেখে নিজেদের প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন নেটিজেনরা। একজন লিখেছেন, “এই কুকুরটি যে যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছে তা ছবিটিতে স্পষ্ট”। পাশাপাশি, আরেকজন জানিয়েছেন, “মাঝে মাঝে প্রকৃতি সত্যিই খুব কষ্ট দেয়।” অনেকে আবার কুকুরটিকে স্বেচ্ছায় দত্তক নেওয়ার কথাও বলেছেন।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর