রাজীব মুখার্জী, হাওড়া-দেশ মাতার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করতে চান। তাই ভারতের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন তার মনে। দেশ ও সমাজের জন্য প্রান উৎসর্গ করায় লক্ষ্য তাঁর। তাই ১৫ ই আগস্ট, ২৩ শে জানুয়ারি কিংবা ২৬ শে জানুয়ারির এই বিশেষ দিন গুলোতে জাতীয়তাবোধের আবেগে উদ্বেলিত হন আরো। নিজের সাইকেলকে বিশেষ ভাবে সাজিয়ে বেড়িয়ে পড়েন দূরদূরান্তে। লক্ষ্য সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দেওয়া সকলের মধ্যে। এই বছরের ৭৩ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাইকেলে করে ১০০ কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করলেন গ্রামীণ হাওড়া জয়পুর থানার ঝামটিয়া গ্রামের ২৫ বছরের যুবক কার্তিক ধাড়া। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি তাঁর বাড়ি থেকে সুসজ্জিত
সাইকেল নিয়ে জয়পুর,আমতা,১০ নম্বর পুল, মানিকপির, গাববেড়িয়া, রানিহাটি হয়ে ৬ নং জাতীয় সড়ক ধরে পাঁচলা, উলুবেড়িয়া, কুলগাছিয়া, বাগনাননের খাজুট্টি, বাকসী হয়ে বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে ফের জয়পুরের ঝামটিয়া পৌঁছান । তাঁর শরীরে তিরঙ্গা গেঞ্জি মাথার উপরে বাঁধা ভারতের জাতীয় পতাকা। ১০ ফুট লম্বা বাঁশের মধ্যে তিরঙ্গা বেলুন দিয়ে সাজানো হয় সাইকেলটি।
এছাড়াও বাজতে থাকে দেশাত্ববোধক গান। আদতে অত্যন্ত গরীব ঘরের যুবক কার্তিক। খড়ের চালের ঘরে বাবা, মা, ভাই বোনের সঙ্গে দিনমজুরের কাজ করে কোনোরকমে দিন গুজরান করেন কার্তিক। নিজস্ব জমি বলতে কিছুই নেই। ভাগচাষী বাবা সনাতন ধাড়ার সঙ্গে কাজ করে দিন কাটান কার্তিক। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও, এই ক’টি দিন এলেই বুক কেঁপে ওঠে কার্তিকের। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা তাঁকে আপন ব্যথিত করে দেয়। তাই ২০১৬ সালের পর থেকে নিজের খেয়ালেই তেরঙ্গা পতাকা ও বেলুন দিয়ে সাজিয়ে তোলে সাইকেলটাকে।
ঝামটিয়া গ্রাম থেকে এই কয়েকটা দিন কাকভোরে বেরিয়ে পড়েন সুসজ্জিত সাইকেল নিয়ে। সারাদিন সাইকেল চালিয়ে সকলের কাছে দেশ প্রেম আর সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দেন। পথে কোথাও জাতীয় পতাকা তোলার অনুষ্ঠান হলে দাঁড়িয়ে পড়েন শ্রদ্ধা জানাতে। ব্যাস এতটুকুতেই তার আনন্দ। তিনি জানান, সমস্ত এলাকার মানুষ তাঁর সাইকেল যাত্রাকে ভীষনভাবে সমাদর করেছেন।
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ছাত্র ছাত্রী এমনকি পুলিশ প্রশাসনের কর্তারাও তাঁর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান। দেশপ্রেমের বার্তা পৌছাতে এসে মানুষ তাঁকে আপ্লুত করেছে। আগামী দিনে তিনি একিভাবে আরও নতুন নতুন জায়গায় গিয়ে মানুষের কাছে দেশ প্রেম ও সম্প্রীতির বার্তা প্রচার করতে চান বলে জানান।