বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মানুষ মন থেকে কিছু করতে চাইলে, কোন প্রতিকূল পরিস্থিতিই তা আটকাতে পারে না, একথা প্রমাণ করে দিল ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) পশ্চিম সিংভূম জেলার চিরাচি গ্রামের এক কৃষক দম্পতি। করোনার জেরে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে লকডাউনের কারণে পেশায় অটো চালক কৃষ্ণ সিং কুন্তিয়া কর্মহীন হয়ে পড়েন।
পাথুরে জমিকে বানিয়ে ফেললেন পুকুর
কর্মহীন হয়ে ভেঙ্গে না পড়ে মনে জোর নিয়ে নতুন কাজ শুরু করেন কৃষক কৃষ্ণ সিং কুন্তিয়া এবং তাঁর স্ত্রী সংকরী কুন্তিয়া। তারা তাঁদের পার্শ্ববর্তী একটি পাথুরে জমিকে হাতুড়ি দিয়ে ভেঙ্গে এই লকডাউনের মধ্যে খোদাই করে পুকুর তৈরি করেছে।
কেমন ছিল সেই জার্নি?
মাত্র ৪৫ দিনে পুকুর তৈরি হয়ে গেলেও, এই জার্নিটা একেবারেরই সহজ ছিল না তাঁদের জন্য। পাথর ভেঙ্গে পুকুর তৈরি কাজ করবে বলে স্থির করার পর, অনেক বড় বড় পাথরের সম্মুখীন হয় তারা। পাথর ভাঙ্গার সময় অনেক বাঁধা বিঘ্ন সামনে এলেও হার মানেনি তারা। তাঁদের পরিশ্রমের ফলে আজ তারা হাসিমুখে জমিতে ফলন ফলাতে পারেছে।
ফসল ফলছে জমিতে
এই সাফল্যের দিনে তারা জানিয়েছে, ‘পাথুরে জমি খোদাই করে পুকুর বানিয়ে তা দিয়ে আমরা জমির ফসলের কাজে লাগাছি। ভুট্টা, মরিচ এবং গার্ফ্লিজ চাষের জন্য এখন ভালো উপযোগী হয়ে উঠেছে আমাদের জমি। বর্তমানে জলের সমস্যা না থাকায় আয়ও ভালো হচ্ছে’।
সম্মানের সাথে সাথে পাচ্ছেন সাহায্যও
কৃষিক্ষেত্রের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ প্রদানকারী আজীবিক মিশনের ফিল্ড থিম্যাটিক সমন্বয়কারী সুজাতা বেক তাঁদের এই পরিশ্রমকে সম্মান জানিয়ে বলেছেন, ওঁরা দুজনেই খুবই পরিশ্রমী। কৃষ্ণ সিং কুন্তিয়া প্রথমে অটো চালাতেন। আর এখন চাষের মাধ্যমে ভালোভাবেই তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন’।
উৎফুল্ল কৃষক দম্পতি
লকডাউনের ফলে কৃষিকাজে উন্নতি ঘটায় কৃষ্ণ কুন্তিয়া জানিয়েছেন, ‘কৃষিতে এখন সেচের বাধা অনেকটাই দূর হয়েছে। এবার থেকে আমরা প্রতিটি মৌসুমে উৎপাদিত ফসল থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারব। প্রথম বৃষ্টির পরে আমাদের ডোবায় এখন প্রায় ৫ ফুট জল জমেছে। সেই জল এখন চাষের কাজে লাগাচ্ছি। বর্তমানে আমি ২৫ টি ডিসমিল মডেলে ড্রিপ ফার্মিং-এর কাজ করছি। আমার এই কাজের জন্য সরকারের ঝাড়খণ্ড উদ্যানতত্ত্ব মাইক্রো ড্রিপ সেচ প্রকল্প থেকেও আমি অনেক সহায়তা পেয়েছি’।