বাংলাহান্ট ডেস্ক : ট্রেনে বসার জায়গা নিয়ে ঝগড়ার সময় একটা কথা প্রায়শই শোনা যায়,”ট্রেনটা কি আপনার পৈত্রিক সম্পত্তি?” নাহ্! ভারতীয় রেল (Indian Railways) সহ তার সব সম্পত্তির মালিক একমাত্র ভারত সরকার। তবে ভারতের রেলের (Indian Railways) ইতিহাসে এমন একজন ব্যক্তি রয়েছেন যিনি একটি সমগ্র ট্রেনের ব্যক্তিগত মালিক হয়েছিলেন।
ভারতীয় রেলের (Indian Railways) বিস্ময়কর ঘটনা
তবে সবটাই আইনি পথে, কোন জালিয়াতি করে নয়। বড় বড় ধনকুবেরদের ব্যক্তিগত জেট বিমান থেকে শুরু করে জাহাজ দামি গাড়ি কিংবা কয়লা বইবার জন্য মাল গাড়ি থাকলেও, যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যক্তিগত মালিকানায় নেই। ভারতে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের (Train) মালিক হয়েছিলেন সম্পুরন সিং নামের পাঞ্জাবের লুধিয়ানার কাতানা গ্রামের এক সাধারণ কৃষক।
আরোও পড়ুন : একদম সময় নেই! আজকেই লাস্ট ডেট! ৭০০০’র বেশি কর্মী নিয়োগ করছে রেল, ঝটপট করুন আবেদন
২০১৭ সালে অমৃতসরগামী, দিল্লি-অমৃতসর স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস (Swarna Shatabdi Express) ট্রেনের মালিক হন তিনি। ২০০৭ সালে লুধিয়ানা-চণ্ডীগড় রেললাইন নির্মাণের জন্য কৃষকদের থেকে জমি কিনছিল ভারতীয় রেল (Indian Railways)। প্রতি একর ২৫ লাখ টাকা দরে কেনা হচ্ছিল জমি। সম্পুরন সিং নামক ওই কৃষকের জমিও ছিল তার মধ্যে।
কয়েকদিন পর তিনি জানতে পারেন, একই পরিমাণ জমি রেলওয়ে একর প্রতি ৭১ লক্ষ টাকা হিসেবে দাম দিয়েছে অন্য এক ব্যক্তিকে। এরপর ওই ব্যক্তি আদালতের দ্বারস্থ হলে, ভারতীয় রেলওয়েকে (Indian Railways) ২৫ লক্ষ টাকার পরিবর্তে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ সম্পূরনকে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে আদালত। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ১.৪৭ কোটি টাকা ২০১৫ সালের মধ্যে দিতে বলা হয়।
কিন্তু মাত্র ৪২ লাখ টাকা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে সক্ষম হন রেলওয়ে (Indian Railways) কর্তৃপক্ষ। ১.০৫ কোটি টাকা বাকি ছিল। ২০১৭ সালের মধ্যেও বাকি টাকা শোধ করতে না পারার কারণ লুধিয়ানা স্টেশনে স্টেশন মাস্টারের কার্যালয় সহ ট্রেনটি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক জসপাল ভার্মা। আদালতের আদেশের পর লুধিয়ানা স্টেশনে জন সম্পূরণ সিং।
অমৃতসর স্বর্ণ শতাব্দী এক্সপ্রেস স্টেশনে প্রবেশ করা মাত্রই আদেশ নামে দেখিয়ে ট্রেন বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি, ট্রেনের মালিক হয়ে যান তিনি। এইভাবেই ভারতের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ব্যক্তিগতভাবে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের মালিক হন। যদিও ভারতীয় রেলের কর্তারা কিছুদিন পর সেই ট্রেন আদালতে গিয়ে খালাস করেন। এখনো পুরো বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন বলে খবর।