বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য একবার বলেছিলেন, “কৃষি আমাদের ভিত্তি,শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ।” ভারতের মতন দেশের অধিকাংশ মানুষ এখনো নির্ভরশীল কৃষি কার্যের উপর। সারাদেশে বিপুল পরিমাণ মানুষ এই কৃষি কাজের মাধ্যমে তাদের জীবন নির্বাহ করে থাকেন। শুধু কৃষক নয়, আমাদের দেশে উৎপাদিত ফসল বর্তমানে বিদেশেও ব্যাপকভাবে রপ্তানি করা হচ্ছে। এর ফলে সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু বিভিন্ন সময় কৃষকদের আত্মহত্যার বা দুরাবস্থার কথা উঠে আসে খবরে। এবার সেই রকম একটি সমীক্ষায় উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ২০২১ সালে প্রতিদিন গড়ে ১৫ জন করে কৃষক ও ১৫ জন করে কৃষিকর্মী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এই সমীক্ষা সামনে আসার পর রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সবার মনে প্রশ্ন উঠছে যে কৃষকরা দুবেলা আমাদের মুখে অন্ন তুলে দেন তাদেরই এমন দুরবস্থা কেন? এই সমীক্ষার পাশাপাশি ন্যাশনাল প্রাইম ব্যুরোর (এনসিআরবি) তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে,২০২১ সালে সারাদেশে মোট যত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে ৬.৬ % মানুষ যুক্ত কৃষি কার্যের সাথে।
ক্রাইম ব্যুরোর (এনসিআরবি) রেকর্ড বলছে, ২০২১ সালে সারা ভারতবর্ষে মোট আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬৪ হাজার ৩৩। তার মধ্যে ১০ হাজার ৮৮১ জনই যুক্ত কৃষি কাজের সাথে। এদের মধ্যে ৫৪১৮ জন কৃষক ও ৫৫৬৩ জন কাজ করতেন কৃষি শ্রমিক হিসেবে। এর পাশাপাশি একটি গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে যে ৫৩১৮ জন কৃষি কর্মী আত্মহত্যা করেছিলেন তাদের মধ্যে ৪৮০৬ জন নিজের জমিতেই চাষ করতেন। লিজ নেওয়া জমিতে কাজ করতেন ৫১২ জন কৃষক। এর থেকে পরিষ্কার সব থেকে বেশি বিপদের সম্মুখীন সেই কৃষকরা যারা নিজেদের জমিতে চাষ করেন।
২০১৭ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ভারতবর্ষে আত্মঘাতী হয়েছেন প্রায় ৫৩ হাজার কৃষক। এর মধ্যে ২০২১ সালেই সর্বাধিক কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ২০২১ সালে সব থেকে বেশি কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। এরপর রয়েছে কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, তামিলননাড়ু। অবাক করে দেওয়া ব্যাপার এই যে, দেশের কৃষক আত্মহত্যা ৮০ শতাংশ ঘটনাই এই রাজ্যগুলি থেকে ঘটেছে।