বাংলাহান্ট ডেস্কঃ উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল কিছুদিন আগে প্রকাশিত হলেও মালদা (Malda) জেলার এক দরিদ্র পরিবারের ছেলে হয়েও প্রাণগোবিন্দের বাড়িতে আনন্দ আর ফুরাচ্ছে না। তাঁর অসাধারণ সাফল্য অর্জন সকলের মুখে মুখে ছড়িয়ে আছে। সাংসারিক প্রতিকূলতাকে জয় করেও, নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকেছে প্রাণগোবিন্দ।
উচ্চমাধ্যমিকে দারুণ সাফল্যলাভ
এবারের করোনা ভাইরাসের কারণে উচ্চমাধ্যমিকের তিনটি পরীক্ষা বাকি থাকলেও, কিছুদিন আগেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। তবে অন্যান্যবারের ন্যায় এবারে আর প্রকাশ করা হয়নি মেধাতালিকা। পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের পোপড়া গ্রামের বাসিন্দা হলেন প্রাণগোবিন্দ মণ্ডল। পোপড়া ঈশ্বরলাল হাইস্কুল থেকে এবারে সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার রাজ্যের মধ্যে সম্ভাব্য পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে।
সংবর্ধনা দিতে আসে বাড়িতে
বাবা পুতুল মণ্ডল একজন কৃষক এবং প্রাণগোবিন্দের মা নিভা মণ্ডলও জমিতে চাষের কাজ করেন। অভাবের সংসারে তাকেও মাঠে গিয়ে চাষের সাহায্যও করতে হয়। আবার অবসর সময়ে ঘরে সেলাই মেশিন নিয়ে টুকটাক সেলাই করে উপার্জিত অর্থ তুলে দেয় বাবা মায়ের হাতে। পরীক্ষার ফলাফল বের হলেও, সে প্রথমে জানতে পারেনি। কিন্তু ফলাফল বেরোনোর পরদিন ফুল মিষ্টি নিয়ে তাঁকে সংবর্ধনা দিতে তাঁর বাড়িয়ে উপস্থিত হয় জেলা শিক্ষা দপ্তরের লোকজনেরা। প্রথমটায় কিছুটা অবাক হলেও, পরক্ষণে ছেলের রেজাল্ট শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় তাঁর পরিবারের লোকজন।
প্রাণগোবিন্দের প্রাপ্ত নম্বর
ছোট থেকেই দারুণ মেধাবী ছিল প্রাণগোবিন্দ। বড় দুই দিদির বিয়ে হয়েছে গেছে এবং তাঁর একটি ছোট ভাই রয়েছে পরিবারে। প্রাণগোবিন্দ বাংলায় ৯৫, ইতিহাসে ১০০, শিক্ষাবিজ্ঞানে ১০০, ভূগোলে ১০০ ও সংস্কৃতে ১০০ নম্বর পেয়েছে৷ তাঁর প্রাপ্ত মোট নম্বর ৪৯৫। ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত মা জানিয়েছেন, ‘সংসারের প্রতিকূলতাকে জয় করে আমার ছেলে যেভাবে এগিয়ে গেছে, তাঁর জন্য আমি গর্বিত’।
আইএএস হওয়ার স্বপ্ন দেখে প্রাণগোবিন্দ
এই দারুণ সাফল্য লাভে প্রাণগোবিন্দ জানিয়েছে, ‘মাঠের কজা সেরে বাড়িতে ফিরে লোকজন দেখে একটু অবাকই হয়েছিলাম। তবে আমি খুবই খুশি আমার এই সাফল্যে। আমার এই সাফল্যের পেছনে আমার বাবা-মা, দিদি, শিক্ষক এবং শিখিকাদের অবদান অনস্বীকার্য। আমি আইএএস অফিসার হয়ে মানুষের জন্য ভবিষ্যতে কাজ করতে চাই’।