বাংলা হান্ট ডেস্ক: চাই শুধু একটি চাকরি (Job)। আর তারই সন্ধানে ১,০০০ কিলোমিটার পথ হাঁটলেন ৪৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। হ্যাঁ, প্রথমে বিষয়টি জেনে অবাক হয়ে গেলেও এবার ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে। শুধু তাই নয়, তাঁর এই সফরে তাঁর দুই নাবালিকা কন্যাও উপস্থিত ছিল। টানা ১১ দিন যাবৎ হাঁটতে থাকেন তাঁরা। সেই সময় তাঁদেরকে কোনো মন্দির অথবা পেট্রোল পাম্পে রাত কাটাতে হত। তবে পথে অপরিচিত এক যুবককে পেয়ে ওই ব্যক্তির চাকরির সন্ধান শেষ হয়। এমতাবস্থায়, এই ঘটনাটি ঘটেছে থাইল্যান্ডে (Thailand)।
এই প্রসঙ্গে The Thaiger-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ৪৭ বছর বয়সী নোরাফাট তাঁর দুই মেয়ের লালন-পালনের জন্য একটি কাজ খুঁজছিলেন। কিন্তু নোরাফাট যে জায়গায় থাকতেন সেখানে কোনো কাজ পাচ্ছিলেন না তিনি। তাই গত ১১ ডিসেম্বর চাকরির সন্ধানে তিনি তাঁর মেয়েদের নিয়ে রায়ং শহরের উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়ে সাতুন শহর ছেড়ে যান।
মূলত, নোরাফাটের কাছে টাকা ছিল না। তাই, তিনি পায়ে হেঁটেই এক শহর থেকে আরেক শহরে যাচ্ছিলেন। ১১ দিনে তিনি প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে ফেলেন। এমতাবস্থায় গত ২২ ডিসেম্বর তাঁরা রায়ং শহরে পৌঁছে যান। যদিও এই দীর্ঘ পথে, নোরাফাট এবং তাঁর ১০ ও ১২ বছর বয়সী দুই নাবালিকা কন্যা মন্দির, পেট্রোল পাম্প এবং শেল্টার হোমে আশ্রয় নেন।
সেই সময়ে তিনি Plus Daeng Rescue Team-এর সারাবুত পুমামারিন নামে এক ব্যক্তির সাথে দেখা করেন। সারাবুত এমন একটি সংস্থার সাথে যুক্ত ছিলেন যারা নিঃস্বদের সাহায্য করে। এই প্রসঙ্গে সারাবুত মিডিয়াকে জানিয়েছেন যে, একজন বাইক আরোহী তাঁকে এই পরিবার সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন। বাইক আরোহীটি পরিবারটিকে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে দেখেন। তারপরে তিনি সারাবুতকে তাঁদের সাহায্য করার জন্য বলেন।
এভাবেই সাহায্য পান তিনি: সারাবুত নোরাফাটের পরিবারকে প্লাক দায়েং জেলার একটি শপিং মলের সামনে বসে থাকতে দেখেন। তাঁর সাথে দেখা করার পর তিনি নোরাফাটকে একটি নির্মাণ সাইটে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। এছাড়া তাঁর পরিবারের থাকার জন্য একটি রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, নাবালিকাদের পড়াশোনার জন্য একটি স্কুলের সাথেও যোগাযোগ করা হয়।
গত ২৫ ডিসেম্বর রবিবার থাই মিডিয়ার সাথে নোরাফাট যখন কথা বলেন, তখন তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এবং তাঁর চোখে জলও ছিল। সবার কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়ে তিনি খুবই খুশি। নতুন জীবন শুরু করতে সাহায্য করার জন্য তিনি সবাইকে ধন্যবাদও জানান।
এই প্রসঙ্গে নোরাফাট জানান, তিনি সাতুন শহরে রেস্টুরেন্ট ও বারে কাজ করতেন। কিন্তু কিছুদিন আগে চাকরি হারিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তাঁর। এমতাবস্থায়, তিনি তাঁর বোনের বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করলেও চাকরি না থাকায় অসুবিধায় পড়েন। তাই তিনি শহরের বাইরে গিয়ে একটি চাকরি খুঁজতে শুরু করেন। পাশাপাশি, রেয়ং শেল্টার হোমের প্রধান নোফানা চারোয়েন্থাম বলেছেন যে, সংস্থাটি পরিবারের যত্ন নেবে। তাঁদের জন্য নতুন ঘরেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি আর্থিক সাহায্য করা হবে।