বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির পাশাপাশি কয়লা এবং গরু পাচার মামলায় তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির তদন্তের মাধ্যমে ইতিমধ্যে হেফাজতে একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা মন্ত্রীরা। তবে এর মাঝে অতীতে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) পাশে থাকার বার্তা দিলেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ইস্যুতে কোনরকম সহানুভূতি দেখায়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। এর মাঝেই এবার অনুব্রতকে ‘বাঘ’-এর সঙ্গে তুলনা করে বসলেন কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তবে নাম না করে এলিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে কটাক্ষ ছুড়ে দেন তিনি। ফিরহাদের দাবি, “তৃণমূলের একজন নেতা অন্যায় করেছেন।”
উল্লেখ্য, একদিকে যখন নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় হেফাজতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, আবার অপরদিকে সম্প্রতি গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এই পরিস্থিতিতে সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শাসকদলকে কোণঠাসা করতে মরিয়া বিরোধী দলগুলি। বিশেষত অনুব্রতর ‘গড়’ বীরভূমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপির মত দলগুলি।
এর মাঝে এদিন বীরভূমে পৌঁছে অনুব্রতর প্রশংসা করার পাশাপাশি বিজেপিকে কড়া আক্রমণ শানান ফিরহাদ। তিনি বলেন, “মমতা ছিলেন, আছেন আর থাকবেন। বীরভূমে এসে অনেকে লাফালাফি করছে। টিভিতে মাঝেমধ্যে দেখায়, বনের বাঘ যখন এক দিক থেকে অন্য দিকে যায়, তখন সবাই লাফালাফি করে। তবে আবার সে ফিরে আসলে শিয়ালগুলি লেজ তুলে পালায়।”
একইসঙ্গে অনুব্রতকে বাঘ আখ্যা দিয়ে ফিরহাদের দাবি, “বীরভূমের বাঘকে কিছুদিনের জন্য খাঁচায় রাখা হয়েছে। সারা জীবন কখনোই রাখা যাবে না। যখন ও বেরোবে, তখন শিয়ালগুলি লেজ তুলে পালাবে।”
যদিও কেষ্টর পাশে দাঁড়ালেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নাম না করে কটাক্ষ করেন কলকাতার মেয়র। তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের একজন নেতা অন্যায় করেছে। তার জন্য আমরা লজ্জিত। তবে তাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের সবাইকে চোর বলা কখনোই উচিত নয়। এটা বিজেপি ভুল করছে।”
এক্ষেত্রে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বীরভূমে দাঁড়িয়ে অনুব্রতকে ‘বাঘ’ আখ্যা দিলেও বর্তমানে একের পর এক দুর্নীতি মামলায় অস্বস্তি ক্রমাগত বেড়ে চলেছে তৃণমূল নেতার। অনুব্রতর পাশাপাশি তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে ইতিমধ্যে দিল্লি জেলে পাঠিয়েছে আদালত। শুধু তাই নয়, এ বছরের শুরুর দিকে অনুব্রত মণ্ডলের লটারির টিকিটে কোটি টাকা প্রাপ্তিও ইতিমধ্যে নজরে এসেছে তদন্তকারী সংস্থার।
এই পরিস্থিতিতে মূল প্রশ্ন হয়ে উঠেছে, অনুব্রত মণ্ডল কি পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্বে আদৌ ছাড়া পাবেন? আর যদি না পান, তাহলে বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ কি হতে চলেছে? এ ইস্যুতে এদিন এক বিজেপি নেতা জানান, “ফিরহাদ হাকিম গ্যাস বেলুন ফোলাতে এসেছিলেন। বীরভূমে ওরা কিছু করতে পারবে না। সেই কারণেই আগে থেকে যতটা সম্ভব মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন।”