বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গার্ডেনরিচ এলাকায় নির্মীয়মাণ বহুতল (Garden Reach Building Collapse) ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এরপর থেকে ফের শিরোনামে বেআইনি নির্মাণ। এই ঘটনার জেরে এবার ক্ষমা চাইলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। বহুতল ভাঙার পর বামেদের দিকে দায় ঠেললেও, এবার এই ঘটনায় ‘ভুল স্বীকার’ করলেন তিনি।
রবিবার রাতে আচমকাই গার্ডেন রিচে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের একাংশ ভেঙে পড়ে। বিল্ডিংয়ের সেই ভেঙে পড়া অংশগুলি পড়ে আশেপাশের ছোট ছোট বাড়িগুলির ওপর। এখনও অবধি এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। সংখ্যাটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই ফিরহাদ এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে নিশানা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এবার এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার মেয়রের বিরুদ্ধে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করার অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠালেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
সেই চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, গার্ডেনরিচে যে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। এরপর স্থানীয় বিধায়ক, রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র (KMC Mayor) ঘটনাস্থলে যান এবং আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধিকে উপেক্ষা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন। উল্লেখ্য, বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহতদের জন্য ৫ লাখ এবং আহতদের জন্য ১ লাখ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ গার্ডেনরিচ কাণ্ডের জের! বেআইনি নির্মাণ নিয়ে এবার বিরাট পদক্ষেপ কলকাতা হাইকোর্টের
এই ক্ষতিপূরণ ঘোষণা নিয়ে বিজেপির (BJP) আপত্তি নেই। তবে পদ্ম-শিবিরের বক্তব্য, ফিরহাদ হাকিম না করে এই ঘোষণা রাজ্য সরকারের শীর্ষ আধিকারিকরা করতে পারতেন। কারণ ফিরহাদ হাকিম তৃণমূলের রাজনৈতিক নেতা হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বিধায়কও। তিনি কীভাবে এই ঘোষণা করলেন? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) কাছে চিঠি পাঠায় বিজেপি।
অন্যদিকে নিজ এলাকায় এমন ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ঘটনা ঘটার পর আক্ষেপের সুর শোনা যায় ফিরহাদের গলায়। জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক আমরা এখনও ১০০% অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করতে পারছি না। অতীতেও কলকাতায় এমন ঘটনা ঘটেছে। আমার সময়েও এমনটা হল এটা দুর্ভাগ্যজনক’। একই সাক্ষাৎকারে মেয়র বলেন, এমন কিছু কাউন্সিলর রয়েছেন যারা রঙ করতে গেলে কিংবা পাঁচিল তুলতে গেলেও টাকা নেন। তবে সবাই এমন নন, এটাও জানান তিনি।
একইসঙ্গে বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে ফের বাম আমলের দিকেই আঙুল তোলেন ফিরহাদ। পাশাপাশি দাবি করেন, কলকাতার পুরসভার এক-একজন কাউন্সিলরের অধীনে বিরাট এলাকা থাকে। কোন এলাকায় আলো নেই, কোথায় জল নেই, কোথায় ড্রেনেজ সিস্টেম বেহাল সেগুলো দেখা কাউন্সিলরের কাজ। তবে অবৈধ নির্মাণ দেখাটা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। কোন নির্মাণ বৈধ আর কোনটা অবৈধ সেটা দেখাটা প্রশাসনিক কাজ বলে জানান মেয়র।