বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘এজেন্সি এজেন্সির কাজ করবে। যদি বেআইনি সম্পত্তি পায়, তাহলে গ্রেফতার করতেই হবে’, গতকালের পর এদিন নিজের অবস্থান হতে ১৮০° ঘুরে মন্তব্য প্রকাশ করলেন কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। গতকাল গার্ডেনরিচে এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাট থেকে ১৭ কোটির বেশি নগদ অর্থ উদ্ধারের ঘটনায় ইডির (Enforcement Directorate) তল্লাশি প্রসঙ্গে এদিন ঠিক এই ভাষাতেই মত পোষণ করেন ফিরহাদ।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলায় নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি থেকে কয়লা এবং গরু পাচার মামলায় সিবিআই এবং ইডির তৎপরতা তুঙ্গে। এ সকল মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে অনুব্রত মণ্ডলরা জেল হেফাজতে রয়েছেন। এছাড়াও সম্পত্তির বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় ফিরহাদ হাকিমের পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক তৃণমূল নেতা মন্ত্রীদের নাম জড়িয়েছে। এই প্রসঙ্গে অতীতে একাধিক সময়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এর মাঝেই গতকাল গার্ডেনরিচের এক পরিবহন ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাট থেকে ১৭ কোটির ওপর নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না উদ্ধার করে ইডি, যা ঘিরে ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এমনকি, এই ঘটনায় শাসকদলের যোগ রয়েছে বলে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এর মাঝে এদিন ভোলবদলের সুর ধরা পরল ফিরহাদের গলায়।
এদিন কলকাতার মেয়র বলেন, “এজেন্সিকে এজেন্সির মতো কাজ করে যেতে হবে। যদি বেআইনি সম্পত্তি পাওয়া যায়, তার জন্য গ্রেফতার করতেই হবে। দেশ চালানোর জন্য এটা প্রয়োজন। হানা নিয়ে কারোর কোনরকম আপত্তি থাকার কথা নয়।” একইসঙ্গে তিনি বলেন, “বর্তমানে এমন একাধিক গেম রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রচুর টাকা লুট হয়ে চলেছে। ব্যাংক থেকেও এই লুট হচ্ছে। তাই মানুষকে এই প্রসঙ্গে সচেতন থাকতে হবে।”
উল্লেখ্য, এদিন ইডির তল্লাশি প্রসঙ্গে এহেন মন্তব্য প্রকাশ করলেও গতকাল তদন্তকারী সংস্থা এবং বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মেজাজে ধরা দেন ফিরহাদ। তৃণমূল নেতার বিধানসভা কেন্দ্রে এহেন ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে ফিরহাদ বলেন, “আমি কেন এর জবাব দিতে যাব? আমাদের দেশে যে এত কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করা হচ্ছে, নীরব মোদী কোটি কোটি টাকা লোন নিয়ে বিদেশে লুকিয়ে রয়েছে, তার জবাব কি প্রধানমন্ত্রী দেন?”
একই সঙ্গে বাংলায় সিবিআই এবং ইডি তল্লাশি প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা বলেন, “বর্তমানে কলকাতায় বিভিন্ন প্রান্তে ইডি হানা দিয়ে চলেছে। এর পিছনে সম্ভবত দুটি কারণ রয়েছে। একটি হলো, তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় পাওয়ানো। আমরা যাতে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই না করি, সেই জন্য আমাদের ভয় দেখানো হয়ে চলেছে। অপর একটি কারণ হতে পারে, ব্যবসায়ীদের ভয় পাওয়ানো; যাতে বাংলায় তারা ব্যবসা না করতে পারে। আসলে সবটাই বাংলার অর্থনীতিকে ভেঙে দেওয়ার জন্য করা হয়ে চলেছে।”
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করতে শুরু করেছে, মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ফিরহাদ হাকিমের আচমকা ১৮০ ডিগ্রি অবস্থান বদন করার পেছনে কারণ কি? এই প্রসঙ্গে এক বিজেপি নেতা বলেন, “এ সকল মামলায় তৃণমূল নেতাদের জড়িত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই কারণে উনি এহেন মন্তব্য করেছেন।”