বাংলাহান্ট ডেস্ক : আমতায় মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের স্মরণসভায় যোগ দিয়ে গিয়ে প্রবল জনরোষের মুখে পড়তে হল রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। তাঁকে ঘিরে গো ব্যাক স্লোগানের ফলে আনিসের পরিবারের সঙ্গে দেখা না করেই ফিরতে বাধ্য হলেন তিনি।
শুক্রবার আমতায় আনিস খানের পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম চলছিল ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে। এই শোকসভায় উপস্থিত ছিলেন মুসলিম ধর্মগুরুরা। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিকেল নাগাদ সেখানে পৌঁছান রাজ্যের পুর এবং পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অপর আর এক মন্ত্রী পুলক রায়। এদি৷ রীতিমতো মুসলিম রীতির ধর্মীয় সাদা পোষাক এবং মাথায় ফেজ টুপি পরেই আমতায় পৌঁছান ফিরহাদ হাকিম।
আমতায় পৌঁছে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল জনরোষের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মুহুর্তেই বদলে যায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের চেহারা। রণক্ষেত্রের আকার নেয় এলাকা। এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হতেই অবস্থা বেগতিক বুঝে মন্ত্রীকে নিরাপত্তা বলয়ে ঘিরে ফেলেন তাঁর নিরাপত্তা কর্মীরা। এরপর সেখানে আর দাঁড়াননি ফিরহাদ হাকিম। উলটো পথে হেঁটে গাড়িতে উঠে যান তিনি। তড়িঘড়ি ঘুরিয়ে নেওয়া হয় গাড়িও।
কিন্তু হঠাৎ কেন এই গো ব্যাক স্লোগান? স্থানীয়দের দাবি, আনিস খানের ধর্মীয় শোকসভায় কেউ ডাকেনি তাঁকে। আনিসের বাবাও নয়। তাহলে ৪২ দিন পর হঠাৎ আনিসের কথা কেন মনে পড়ল মন্ত্রীমশাইয়ের? শুধু তাইই নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, ‘মাত্র ২ জন নীচুস্তরের পুলিশ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেই দায় ঝেড়ে ফেলেছে সিট। ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিলেও ৪২ দিন পেরোলেও মেলেনি কিছুই। ঘটনার পিছনের আসল মাথাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’
উল্লেখ্য, এদিন আনিস খানের বাবার সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। শুধু দেখা করাই নয়, অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে মিছিলেও হাঁটতে দেখা যায় আনিসের বাবাকে। আনিসের বাবা জানান, ‘সরকার ৫ লক্ষ টাকা এবং দুটি সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ওই টাকা আর চাকরি কিছুতেই নিতে রাজি নই আমরা। মাথা উঁচু করে লড়ব। মাথা বিকোবো না।’ ফলে তৃণমূল সরকারের উপর যে একেবারেই আস্থা রাখছে না মৃতের পরিবার, আজকের ঘটনার পর একথা বলাই বাহুল্য।