কলকাতায় দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে চাইলে করুন নাম নথিভুক্ত, জানুন পদ্ধতি

 

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ টিকা নিতে গিয়ে বিপুল লাইন। ভাঙছে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং কোভিড বিধিও। অথচ করোনা থেকে বাঁচতে বিকল্প নেই টিকাকরণের। ইতিমধ্যেই আইসিএমআর সহ বিভিন্ন গবেষণা জানিয়েছে টিকা নেওয়া থাকলে ভাইরাসের মারণ প্রভাব কমে যেতে পারে অন্তত ৮০ শতাংশ। আর সেই কারণেই লম্বা লাইনের ভয়কে দূরে ঠেলে হাসপাতালে হাসপাতালে টিকা নিতে উপস্থিত হচ্ছেন বিপুল জনতা। গতদিনই এসএসকেএম-এ বিক্ষুব্ধ জনতাকে থামাতে ডাকতে হয়েছে পুলিশও। টিকাকরণ নিয়ে একদিকে যেমন রয়েছে নানান জটিলতা তেমনি বড় জটিলতা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভুল তথ্য। একসময়ের টিকা কতখানি কার্যকর, সে সম্পর্কিত নানা ভুল তথ্যকে কেন্দ্র করে টিকা গ্রহণে অনিচ্ছুক ছিলেন অনেকেই। তাই এখন পড়েছ টিকাকরণের হুড়োহুড়ি। সেক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়েছে দ্বিতীয় ডোজকে কেন্দ্র করে। কেন্দ্রের ঘোষণা অনুযায়ী ৪৮ দিন নয় কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ পর। এই বিষয় নিয়ে যথেষ্ট বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মধ্যে। গতদিন এসএসকেএমের বিক্ষোভ ছিল তারই প্রমাণ।

এবার এ ধরনের একাধিক সমস্যা থেকে বাঁচতে নতুন সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের জন্য এবার থেকে আর লাইন দিতে হবে না টিকা গ্রহিতাদের। এবার থেকে হোয়াটসঅ্যাপে আগে থেকেই ঠিক করে নেওয়া যাবে দিনক্ষণ। 8335999000 নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপ করে নাম, ঠিকানা এবং প্রথম টিকা নেওয়ার সময় দেওয়া আইডেন্টিটি নম্বর পাঠাতে হবে আবেদনকারীকে। সেই অনুযায়ী আবেদনকারীকে টিকা নেওয়ার সঠিক সময় জানিয়ে দেবেন পুরো কর্তৃপক্ষ। তবে আপাতত এই সুবিধা রয়েছে শুধু কলকাতাতেই। কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানান, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পুরসভা টিকা নেওয়ার স্থান, সময় ও তারিখ জানিয়ে দেবে। এরপরে মানুষকে আর লম্বা লাইন দিতে হবে না।তবে এই সুবিধা কেবলমাত্র দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রেই।

সামাজিক দূরত্ববিধি মাথায় রেখে যতই টিকাকরণ সম্ভব হয় সেই কারণেই এবার এই নতুন পরিষেবা চালু করলো কলকাতা পুরসভা। এখনও পর্যন্ত দেশে টিকা পেয়েছেন ১৮ কোটি ২২ লাখ ২০ হাজার ১৬৪ জন মানুষ। যদিও সংক্রমণের তুলনায় টিকাকরণের গতি যথেষ্ট ধীর। দেশের অধিকাংশ হচ্ছেন তিন লাখের ওপর মানুষ। গত ২৪ ঘন্টাতেও সংখ্যাটা ছাড়িয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার ১৭০। যদিও শেষ কয়েক দিনের তুলনায় সংক্রমণের সংখ্যা সবচেয়ে কম। তবে একই সঙ্গে উদ্বেগ বাড়িয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪০৭৭ জনের। এই সংখ্যায় বড় পরিবর্তন আনতে চাই গণ টিকাকরণ। কাজের গতিও আরো বৃদ্ধি করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার এই প্রয়াস মানুষকে যে কিছুটা আশ্বস্ত করবে তা বলা বাহুল্য। যদিও গ্রামে গ্রামে যতক্ষন দ্রুতগতিতে টিকাকরণ শুরু হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত ভাইরাসের মারাত্মক প্রভাব কমানো অসম্ভব বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর জন্য অবশ্যই দরকার, চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনক্ষমতা বানানো। এই মুহূর্তে কোভিড টিকা তৈরি করছে দেশের মাত্র দুটি সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট এবং ভারত বায়োটেক। এক্ষেত্রে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পরামর্শ ছিল, ভ্যাকসিনের ফর্মুলা সকলের উদ্দেশ্যে ছড়িয়ে দেওয়া যায় কিনা। তাহলে অনেক দ্রুত গতিতে শুরু হতে পারে উৎপাদনের কাজ। কারণেই গতিতে ভ্যাকসিন তৈরি হলে গোটা দেশের মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে প্রায় দু বছর সময় লেগে যাবে বলেও আশঙ্কা করেছিলেন তিনি। তার এই পরামর্শ ভেবে দেখা যায় কিনা, সে দিকেও নজর দিতে হবে সকলকে।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর