পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যাবস্থাকে প্রথম যে জাতি আপন করে নিয়েছিলেন তারা বাঙালি। শুধু পুরুষই নয়, কাদম্বিনী কাদম্বিনী গাঙ্গুলি- চন্দ্রমুখী বসুর মত নারীরাও পাশ্চাত্য শিক্ষার আলোকে নিজেদের উদ্ভাসিত করেছিলেন। পুরুষ প্রধান শিক্ষা ব্যাবস্থায় প্রথম নারী হিসাবে গ্রাজুয়েট হয়েছিলেন তারা৷ এদেরই যোগ্য উত্তরসূরি আরেক বাঙালি মেয়ে সোনালি ব্যানার্জি, ভারতের প্রথম মহিলা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার।
১৯৯৫ সালে যখন প্রথম মহিলা হিসাবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রবেশিকা পাশ করেন সোনালি তখন রীতিমতো হই হই পরে গেল তারাতলার মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। কারন হস্টেল তো দূরের কথা একজন মহিলা কর্মীও নেই কলেজে৷ সেই পুরুষ প্রধান কলেজ থেকে একাকী নারী হিসাবে যুদ্ধ শুরু সোনালির।
সোনালির কাকা কাজ করতেন মার্চেন্ট নেভিতে। ছোট থেকে কাকার মুখে সমুদ্রযাত্রার বর্ণনা শুনতে শুনতেই সোনালি ভেবে নিয়েছিল সেও একদিন সমুদ্র জয় করবে। কলেজে অধ্যপকদের জন্য নির্দিষ্ট একটি কোয়ার্টারে থাকতে হলেও প্রথম দিকে সোনালিকে সহ্য করতে হয়েছিল পুরুষ সহপাঠীদের তাচ্ছিল্য। কিন্তু সে সব জয় করেই ১৯৯৯ সালে প্রথম মহিলা হিসাবে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন তিনি।
কিন্তু পাশ করার পরও কোনো কোম্পানি তাকে ট্রেনিং-এ নিতে রাজি নয়৷ অবশেষে mobil shipping co নামে এক সংস্থায় শর্ত সাপেক্ষে ট্রেনিং এর সুযোগ পেল। তবে শর্ত ছিল, কোনো রকম ভুল হলে তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে৷ একাকী মহিলা হিসাবে সাফল্যের সাথেই সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, হংকং, ফিজি হয়ে ভেসে গেলেন সুদুর অস্ট্রেলিয়ায়। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয় নি তাকে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে ২০০১ সালেই এক মার্চেন্ট নেভির দ্বায়িত্ব পেলেন তিনি।