বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: বাকি আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। তারপর এই দু বছরের ব্যবধান কাটিয়ে যুবভারতীর বুকে আবার আয়োজিত হতে চলেছে কলকাতা ডার্বি। ফের একবার একে অপরের মুখোমুখি হবে বাঙালির দুই আবেগ ইস্টবেঙ্গল এবং এটিকে মোহনবাগান। সেই উত্তেজনার আঁচ বেশ কিছুদিন আগে থেকেই চড়তে শুরু করে দিয়েছে। ম্যাচের দিন যে গ্যালারি কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
এই ম্যাচে দুই পক্ষই মরিয়া হয়ে নামবে। এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফার্নান্দো যতই বলুন না কেন যে তাদের মূল লক্ষ্য না তাদের লক্ষ্য আরো বড়, সকলেই জানেন যে কলকাতা ডার্বিকে হালকা হবে নেওয়ার ক্ষমতা বিশ্বের কোনও কোচেরই নেই। এখনো অবধি দুটি ম্যাচেই নিজেদের সর্ব শক্তিশালী স্কোয়াড নামিয়েও জয় আসেনি এটিকে মোহনবাগানের ঝুলিতে। প্রথম ম্যাচে অনেক পিছিয়ে থাকা রাজস্থান ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ৩-২ ফলে হারতে হয়েছিল মেরিনার্সদের। তার পরের ম্যাচে মুম্বাই সিটি এফসি বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও জয় হাতছাড়া হয়েছিল। পরপর দুটি ম্যাচে প্রথমে গোল করেও জয় না আসায় কিছুটা হতাশ সমর্থকরা। কিন্তু একবার ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে পারলে পুরো সমর্থক গোষ্ঠী ফের চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
অপরদিকে ইমামি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের অবস্থাটা একটু অন্যরকম। বাকিদের চেয়ে অনেক পরে দল গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাদের। তারমধ্যে দুটো ম্যাচ খেলে এখনো কোনও গোলের দেখা পায়নি দল। যদিও ওই দুটি ম্যাচে হাঁটতেও হয়নি তাদের। কিন্তু ফরোয়ার্ডরা, উইঙ্গার বা মিডফিল্ডারদের তৈরি করা একাধিক সুযোগ ক্রমাগত নষ্ট করে চলেছেন। কলকাতা ডার্বিতে সেই এক ভুল হলে যে তাদেরকে ভালোমতোই ভুগতে হবে তা জানেন লাল-হলুদ সমর্থকরা।
সমর্থকদের আবেগকে সম্মান করছেন লাল-হলুদ কোচ কনস্ট্যানটাইন। কিন্তু তিনি সমর্থকদের যুক্তি দিয়ে ভাবার কথাও বলেছেন। জানিয়েছেন যে কোনো দলে মাঠে হারার জন্য নামবে না। কিন্তু তিন সপ্তাহ আগেও তার হাতে মাত্র ১২ জন ফুটবলার ছিল। কয়েকদিন আগেই নিজের পুরস্কারের সঙ্গে অনুশীলন করতে পেরেছেন তিনি। এখনো দুই এক জন ভারতীয় তারকা ও এক বিদেশির যোগ দেওয়া বাকি রয়েছে। এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সমর্থকদের তাদের পাশে থাকার কথা বলেছেন কনস্ট্যানটাইন। তিনি বলেছেন রবিবার জিতলেও তারা তিন পয়েন্ট পাবেন, আর যদি হেরে যান তাহলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে না।
এটিকে মোহনবাগানের স্কোয়াড ভালো, তাতে কোন সন্দেহই নেই। দলের প্রত্যেকটি পজিশনে দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলারের পাশাপাশি অত্যন্ত দক্ষ এবং অভিজ্ঞ বিদেশিরাও রয়েছে। জনি কাউকোরা খাতায়-কলমে ইস্টবেঙ্গলের থেকে এগিয়েই মাঠে নামবেন। কিন্তু তরুণদের নিয়ে গড়া এই ইস্টবেঙ্গলকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। মাঠে বা প্রান্তে তুহিন দাস এবং ডান প্রান্তে অনিকেত যাদবদের দিয়ে তৈরি দুর্দান্ত আক্রমণ ইন্ডিয়ান নেভি এবং রাজস্থান ইউনাইটেডের ডিফেন্সকে রীতিমতো বেগ দিয়েছে। ডিফেন্সে চুংগুঙ্গা এবং ইভান গঞ্জালেজের জুটির মধ্যেও ভালো বোঝাপড়া দেখা গিয়েছে। গোলরক্ষক কমলজিৎ দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন। সমস্যা শুধু একজন জেনুইন গোল স্কোরারকে নিয়ে। রবিবার ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা তাদের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড এলিয়ান্দ্রোর পারফরম্যান্সের দিকে অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকবেন।