বাংলা হান্ট ডেস্ক :পেঁয়াজের দামের ঝাঁঝে যেন চোখের জল আর থামছেই না। তাই তো দাম কমিয়ে যাতে রাজ্যবাসীর সুরাহা করা যায় তার জন্য প্রথমে টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তারপর ভর্তুকি দিয়ে রেশন দোকানে পেঁয়াজ বিলি করার কথা ঘোষনা করেন তিনি। সেই মতো চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই রাজ্যের সমস্ত রেশন দোকানগুলিতে মাত্র ৫৯ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ পাওয়ার কথা ঘোষনা করা হয়।
সেই মতো বেশ খুশিই হয়েছিলেন রাজ্যবাসী। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা ছিল রেশনে পচা পেঁয়াজ বিলি নিয়ে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা যে এভাবে সত্য়ি হবে তা বোধহয় ঘুনাক্ষরেও বোঝা যায়নি। কিন্তু এবার তা যে কতটা সত্য়ি তার হারে হারে প্রমান মিলল। রাজ্যেরই এক রোশন দোকানে গিয়ে পেঁয়াজ দেখেই চক্ষু চড়কগাছ হল এক ক্রেতার।
এত পচা পেঁয়াজ কিভাবে নেওয়া যাবে। প্রথমে দোকানের মালিককে বলতেই তিনি অস্বীকার করলেন এবং ভালো পেঁয়াজ দিতে চাইলেন না। তাই উপায় না দেখে সরাসরি দিদিকে বলোতে ফোন করে ফেললেন ওই খরিদ্দার। ব্যাস সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের সুফল বাংলার গাড়ি এসে হাজির হিরদেবপুরের ওই রেশন দোকানে।
তারপর গাড়ি থেকে নামল টাটকা পেঁয়াজ। যা সেখানে উপস্থিত সকলেই লাইন দিয়ে কিনে নিতে পারলেন। এই খবর প্রকাশে আসতে না আসতেই অমনি নড়েচড়ে বসেছে রেশন দোকানের মালিকরা। তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কেউই কল্পনা করতে পারেননি ফোন কলের সঙ্গে সঙ্গে সুফল বাংলার গাড়ি এসে পৌঁছাবে। আসলে আফগানিস্থান, ইজরায়েল থেকে কেন্দ্রের আমদানি করা পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বাজারে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগেছে আর তাই বস্তাবন্দি পেঁয়াজ পচেও গেছে। তাইতো মুখ্যমন্ত্রী নিজেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন।
জানা গিয়েছে ওই ক্রেতা প্রথমে দোকানের মালিকের সঙ্গে বচসা করেছিলেন ফল না পাওয়ায় স্থানীয় কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন, এরপর ওই ব্যক্তি সোজা দিদিকে বলো ফোন নম্বরে ফোন করে দেন। ব্যাস মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে সুফল বাংলার গাড়ি এসে পেঁয়াজ সরবরাহ করে। আসলে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় রাজ্যের ৯৩৪টি রেশন দোকানে ৫৯ টাকা কেজি প্রতি দরে পেঁয়াজ দেওয়ার কথা ঘাষনা করেছিলেন।
কারণ, এ সপ্তাহেও পেঁয়াজের দাম আকাশ ছোঁয়া প্রায় ১২০ টাকার আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। তাই তো রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার, ডিরেক্টর অফ রেশনিং এবং খাদ্য দফতরের সহসচিব সহ খাদ্য দফতরের ও কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকরা একটি প্রশাসনিক বৈঠকে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার রেশন দোকানে পেঁয়াজ সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আর সোমবার ন্যায্যমূল্য দোকানের মালিকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আর সেখানেই বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যার মধ্যে ন্যায্যমূল্যে কানে পেঁয়াজের ভর্তুকি দিয়ে বিক্রি করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই প্রতিদিন 90 পেঁয়াজের প্রয়োজন হবে বলে জানানো হয়েছে রাজ্যের খাদ্য দফতরের তরফে। উল্লেখ্য মাত্র সাত দিনের মধ্যে দেশে পেঁয়াজের আমদানি করা নিয়ে বলতে গিয়ে
কেন্দ্রীয় খাদ্য উপভোক্তা মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান টুইট করে জানিয়েছিলেন, পেঁয়াজের সরবরাহ সহজ করার জন্য এম এমটিসি মিশর থেকে হাজার নব্বই টন এবং তুরস্ক থেকে 11 হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করছে, যা 15 ডিসেম্বর থেকে 15 আর মারের মধ্যেই পাওয়া যাবে। এবং জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে আরও 4 হাজার টন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। যার জন্য নতুন করে তিন বারও রাখা হয়ে গিয়েছে।