আজ থেকে দু বছর আগে পাকিস্তানের মিডিয়ার দিকে লক্ষ করলে দেখা যেত, তারা CPEC প্রজেক্টকে ব্যাপক প্রচার করতো। পাকিস্তানের মিডিয়া এমন প্রচার চালাতো মনে হতো পাকিস্তানের সব সমস্যার একটাই সমাধান তা হলো CPEC প্রজেক্ট। প্রথমত জানিয়ে CPEC প্রজেক্ট চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রজেক্ট এর অংশ। পাকিস্তানের মিডিয়া দাবি করতো CPEC সম্পূর্ণ হলে পাকিস্তানের ইকোনমি ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে এবং চীন ভারতের থেকেও শক্তিশালী হয়ে যাবে। যদিও ভারতের বিশেষজ্ঞদের দাবি ছিল, চীন পাকিস্তানকে নিজের জালে ফাঁসাচ্ছে। অন্যদিকে পাকিস্তানি মিডিয়া এটাও দাবি করতো, ভারত ও আমেরিকা একসাথে মিলে CPEC কে বিফল করার চেষ্টা করছে।
কিন্তু এখন পাকিস্তানের মধ্যে হওয়া CPEC প্রজেক্ট প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে CPEC প্রজেক্ট এর উপর কাজ হবে বলে আশা নেই। এর কারন পাকিস্তান এতদিনে অনুভব করেছে যে তারা চীনের জালে ফেঁসে গেছে। তাই CPEC প্রজেক্ট থেকে নিজেদের বাকি যতটুকু সম্ভব বাঁচানোর চেষ্টা করছে। জানিয়ে দি, CPEC প্রজেক্ট চীনের এবং এটাতে সবথেকে বেশি লাভ তুলবে চীন। কিন্তু এর জন্য খরচ পাকিস্তানকে করতে হচ্ছিল। চীন পাকিস্তানকে CPEC নির্মানের জন্য লোন দিয়েছিল। আবার উল্টো দিকে নির্মাণ কাজে সবথেকে বেশি অংশ নিত চীনের কোম্পানি ও চীনের কর্মচারীরা। অর্থাৎ মূর্খের দেশ পাকিস্তানকে পুরোপুরি গ্রাস করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে চীন।
পাকিস্তানে CPEC কাজের জন্য সেখানে চীনের প্রায় ৬০ হাজার কর্মী ছিল। অন্যদিকে পাকিস্তান নাম মাত্র কাজও এই প্রজেক্ট থেকে পেত না। আবার লোন নেওয়ার জন্য টাকাও পাকিস্তানকে মেটাতে হবে। প্রজেক্ট সম্পুর্ন হলে চীন এটাকে নিজের ব্যাবসা বাণিজ্য ও সামরিক দৃষ্টিকোন থেকে ব্যাবহার করবে। তাই সবকিছু বুঝতে পেরে পাকিস্তান এখন প্রজেক্ট থেকে পিছিয়ে এসেছে। কাজ প্রায় বন্ধ এবং নতুন করে পাক সরকারের মধ্যে কোনো উৎসাহ নেই। করাচির নামী লেখক নাদিম আখতার বলেছেন CPEC প্রজেক্ট প্রায় বন্ধ এবং এর কোনো ভবিষৎ আর নেই।
পাকিস্তান এত হারে লোন নিয়েছে যে বাহ্যিক সাহায্য ছাড়া পাকিস্তান আর বের হতে পারবে না। মোট ঋণের পরিমাণ ১০৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে। বিদেশী মুদ্রা ভান্ডার একেবারে নীচে পৌঁছে গেছে। পাকিস্তানি মুদ্রা বিগত ৮ মাসে ৪ বার নিন্মমুখী হয়েছে। IMF এর থেকে লোন নিয়েও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তবে এটার থেকেও আরো বড়ো খারাপ খবর পাকিস্তানের জন্য অপেক্ষা করছে। আসলে CPEC নামক যে প্রজেক্ট এর কাজ বন্ধ রয়েছে তাতে চীন যত খরচা করেছে সেটা ইনভেস্ট নয় বরং লোন। অর্থাৎ পুরো টাকা চীনকে ফেরত দিতে হবে, তাও আবার মোটা সুদের সাথে। ২০২০ সালের জুন মাসে প্রথম কিস্তি ৪০০ মিলিয়ন ডলার চীনকে দিতে হবে। শীঘ্রই পাকিস্তান বাইরে থেকে আরো একটা বেল আউট প্যাকেজ না পেলে দেউলিয়া হয়ে যাবে।