বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশকে পিছনে ফেলল বাংলাদেশ (Bangladesh) । সে দেশের প্রথম করোনা চিকিৎসায় কার্যকর ‘রেমডেসিভির’ উৎপাদন শুরু করল।আমেরিকার (America) ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় রেমডেসিভির ওষুধটি পরীক্ষামূলক জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলো ২৯ এপ্রিল। সেই ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর এই ওষুধ তৈরি করে ফেলার দাবি করল। উৎপাদনের সব প্রক্রিয়া শেষ। এখন চলছে সেই ওষুধ সরবরাহের প্রস্তুতি।
এসকেএফ-এর অন্যতম কর্তা সিমিন হোসেন জানান, “করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দেশের এই কঠিন সময়ে আমরা দেশবাসীকে এই সুখবর দিতে চাই যে, বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ বলে স্বীকৃত জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনের সব ধাপ আমরা সম্পন্ন করেছি।”
এসকেএফের উৎপাদন করা রেমডেসিভিরের বাণিজ্যিক নাম ‘রেমিভির’। করোনা চিকিৎসায় মার্কিন সংস্থা গিলিয়েড সায়েন্সেস কোম্পানির তৈরি এই ওষুধ সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) গত সপ্তাহে রেমডেসিভিরকে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।
এদিকে জাপানের ওষুধ প্রশাসন শুক্রবার থেকে ওষুধটি করোনা রোগীদের ওপর প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে। তবে কবে নাগাদ জাপান এর উৎপাদনে যাবে তা এখনও ঠিক হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এই অবস্থায় এসকেএফই বিশ্বে প্রথম জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনকারী সংস্থা।
রেমডেসিভির উৎপাদনের একচেটিয়া স্বত্ব রয়েছে গিলিয়েডের, কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপুঞ্জ স্বীকৃত বাংলাদেশের মতো অনুন্নত দেশগুলো এ সব স্বত্ব অগ্রাহ্য করতে পারে। তবে এখনই ওষুধটি খোলাবাজারে পাওয়া যাবে না। এটি দেয়া হবে করোনা চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ সরকার (Government of Bangladesh) অনুমোদিত হাসপাতাল বা ক্লিনিককে।
যেহেতু এটি একটি শিরায় দেওয়া ইনজেকশন, সে কারণে এর উৎপাদনে সূক্ষ্ম প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। দুই মাস ধরে এসকেএফ কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের ফলেই এত কম সময়ে এটা উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিমিন হোসেন। খুব শীঘ্রই বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের উপর এই ওষুধ প্রয়োগ শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে।
রেমডেসিভির করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষের শিরায় ইনজেকশন হিসেবে দিতে হয়। রোগের ওপর এর ডোজ নির্ভর করে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গুরুতর অসুস্থের জন্য ৫ অথবা ১০ দিনের ডোজ প্রয়োজন হতে পারে। কত দাম হতে পারে রেমিভিরের? সিমিন জানান, প্রতি ডোজ পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকার মতো দাম হবে। ওষুধটির প্রয়োগের দুই ধরনের ডোজ রয়েছে– ৫ ও ১০ দিনের। ১০ দিনে ৫৫ হাজার টাকার মতো এবং ৫ দিনের ডোজে ৩০ হাজার বাংলাদেশি টাকা দাম হতে পারে।