রাজ্যে এই প্রথম! প্রাথমিকে প্রশ্নপত্র তৈরি করবে পর্ষদ, শিক্ষাব্যবস্থায় কি কি বদল আসছে?

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাথমিক শিক্ষার (Primary Education) ওপরেই নির্ভর করে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ। তাই একেবারে প্রাথমিক স্তর থেকেই তাঁদের পড়াশোনার ভীত মজবুত করতে জোর দেওয়া হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উপর। তাই এবার নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক স্কুলস্তরের পরীক্ষা গুলিকে তিনটি সমোটিভ বা সার্বিক মূল্যায়নের ভাগে ভাগ করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, নতুন শিক্ষা বর্ষে প্রাথমিকের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সার্বিক মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র করবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।

প্রাথমিক শিক্ষায় (Primary Education) বদল নিয়ে কী বলছেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল?

সূত্রের খবর,এর মধ্যে প্রথম সমোটিভ এপ্রিল মাসে নেওয়া হবে,আগস্ট মাস নাগাদ। আর দ্বিতীয় সমোটিভ এবং তৃতীয় সমোটিভ হবে ডিসেম্বর মাসে। সাধারণত এতদিন স্কুলগুলি এই সমোটিভ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিজেরা করলেও এই প্রথম প্রাথমিক (Primary Education) স্কুলের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করছে পর্ষদ নিজেই। পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল এপ্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘স্কুলগুলি নিজেরা প্রশ্ন করলে প্রশ্নের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে রাজ্যের সব স্কুলের জন্য যদি পর্ষদ প্রশ্ন করে তাহলে একটা নির্দিষ্ট মান বজায় থাকবে।’ একইসাথে তিনি জানিয়েছেন এরফলে সমস্ত পড়ুয়ার পড়াশোনার মান থেকে শুরু পড়াশোনায় তাঁদের অগ্রগতি কেমন হচ্ছে সেটাও পর্ষদ জানতে পারবে। পর্ষদ সভাপতির কথায়, ‘তাই পর্ষদ থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সামেটিভের প্রশ্নপত্র করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’

শুধু তাই নয়, একইসাথে তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিকের (Primary Education) এই প্রশ্ন তৈরি করার সমস্ত খরচ বহন করবে পর্ষদ। এমনকি প্রশ্নপত্র স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও থাকবে পর্ষদের। এছাড়া কতদিনের মধ্যে কোন অধ্যায় শেষ করতে হবে এবং এমনকি পড়ানোর সময় শিক্ষকদের কোন অধ্যায়ের ওপর বেশি জোর দিতে হবে এবার সেটাও দেখবে পর্ষদ। এছাড়াও পর্ষদ সভাপতি এদিন জানিয়েছেন, ‘সামেটিভ কবে হবে তার একটা রুটিনও থাকবে। তবে প্রশ্ন পত্রের দু’টি সেট থাকবে। কারণ যদি কোনও এলাকায় স্থানীয় কারণে স্কুল ছুটি থাকে, তাহলে  সেই স্কুলের পড়ুয়ারা দ্বিতীয় সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেবেন।’

আরও পড়ুন: অ্যাকশন মুডে নবান্ন! ভুয়ো OBC সার্টিফিকেট ইস্যুতে এবার কড়া পদক্ষেপ রাজ্যের

পর্ষদের তরফ থেকে কাডেমিক ক্যালেন্ডার নিয়েও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর প্রথম সামেটিভ হওয়ার পরে দ্বিতীয় সামেটিভের জন্য দ্বিতীয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করবে পর্ষদ। এপ্রিলের শেষেই  দ্বিতীয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার  প্রকাশিত হবে। এরপর মে মাস থেকে সেই অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পঠনপাঠন শুরু হবে স্কুলে। মে থেকে পরবর্তী চার মাস অর্থাৎ অগস্ট পর্যন্ত এই অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি হচ্ছে। এরপর আবার তৃতীয় সামেটিভের জন্য সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফের তৃতীয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি করা হবে।

West Bengal

প্রশ্ন হল আচমকা রাজ্যের প্রাথমিক (Primary Education) স্তরের পড়াশোনায় এই বদল আনা হচ্ছে কেন? এপ্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষার ওপরেই পড়ুয়াদের ভিত নির্ভর করে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় স্কুলগুলিতে যেমন পড়াশোনা করানো হয় তার উপরেই প্রশ্ন তৈরি হয়। এরফলে রাজ্যের পড়ুয়াদের পড়াশোনার মান কেমন হল তা বোঝা যায় না। অনেক ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের পড়াশোনার ভিতও পাকাপোক্ত হয় না। তবে এবার পর্ষদের তরফ থেকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরী করার পাশাপাশি অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরী করে দেওয়ায় পড়ুয়াদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে যেমন একটা নির্দিষ্ট মান বজায় থাকবে, তেমনই পড়ুয়াদের পরীক্ষার উত্তর দিতেও সুবিধা হবে।

Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর

X