বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জীবনে সফল হতে গেলে ইচ্ছাশক্তিই হল সবচেয়ে বড় শক্তি। প্রতিকুলতা যেমনই হোক না কেন ইচ্ছাশক্তি প্রবল হলে অবশ্যই সফল হওয়া যায়। সে কথাই ফের একবার প্রমান করল ঝাড়খণ্ডের লতেহার জেলার মহুয়াডান্ডের সেন্ট জোসেফ স্কুলে মালী হিসেবে কাজ করা আনমোল এক্কার মেয়ে অমূল্য এক্কা। কলকাতায় আয়োজিত একটি ইন্টারভিউতে সফল হয়ে কুড়ি বছর বয়সী অমূল্য এবার কাজ করবেন এয়ার হোস্টেস হিসেবে।
জীবনের সফর ছিল ভয়ানক কঠিন, মহুয়াডান্ডের লুরগুমি গ্রাম এতটাই প্রত্যন্ত যে সেখানে সেভাবে মোবাইল নেটওয়ার্ক অবধি নেই, চূড়ান্ত অব্যবস্থা বিদ্যুতের অথচ এয়ার হোস্টেস হিসেবে প্রস্তুতি নিতে গেলে ইন্টারনেটের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা একান্ত জরুরী। ছোট্ট অমূল্য পড়াশোনা শুরু করে গ্রামেরই প্রাথমিক বিদ্যালয় সন্ত মিখালাল শালে। পরবর্তী ক্ষেত্রে বাবা আনমোল তাকে ভর্তি করে দেন সেন্ট জোসেফ স্কুলে। আনমোলের মোট পাঁচ সন্তান, তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে অমূল্য দ্বিতীয়।
পড়াশোনার সাথে সাথেই ইন্টারনেট ব্যবহারেও গুরুত্ব দিতে শুরু করে অমূল্য। যদিও নেটওয়ার্কের কারণে গুগলের প্রথম পেজ খোলাই ছিল রীতিমতো দুষ্কর। তবে তাকে সাহায্য করেছে গুগলই। সেখান থেকেই এয়ার হোস্টেসদের ইন্টারভিউ সম্পর্কে জানতে পারে অমূল্য। লিখিত পরীক্ষায় এবং ইন্টারভিউয়ের পর আজকে সে সফল।
সেন্ট জোসেফ স্কুলে মালির কাজ করে মাসে ৮০০০ টাকা বেতন পেতেন আনমোল এক্কা। কিন্তু ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যাপারে কোনও ত্রুটি রাখেননি তিনি। সর্বদা নানাভাবে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছেন তাদের। কার্যত আজ সফলতার মুখ দেখলো তার এই পরিশ্রম। এলাকায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা সেরকম ভাল নয়, ইন্টারনেট ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। সেখান থেকে উঠে আসা অমূল্য ইচ্ছাশক্তির এক চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত।