বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। যতই দিন যাচ্ছে ততই বড় হচ্ছে অভিযুক্তদের তালিকা। রাজ্যের নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের নাম জড়ানোয় যথেষ্টই অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসকদল। তবে বর্তমানে নিজেদের ওপরে ওঠা অভিযোগ সরিয়ে পাল্টা বাম জমানায় নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল। সুপারিশেই চাকরি হয়েছে সিপিএম (CPM) নেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) স্ত্রী সহ বাম আমলে বহুজনার, এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তীর চাকরির এক সুপারিশপত্র প্রকাশ্যেও আনা হয়। তবে সিপিএমের পাল্টা বক্তব্য, ওটা কোনও সুপারিশপত্রই নয়। সাধারণ নিয়ম মেনেই চাকরি পেয়েছিলেন মিলি, তারই নিয়োগপত্র সেটি। এইসব নিয়েই যখন উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঠিক সেই সময়ে সিপিএমের প্রাক্তন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা সম্পাদক তথা পিডিএস নেতা সমীর পুততুণ্ডর (Samir Putatunda) দাবি, সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলির চাকরি তিনিই করিয়েছিলেন। ছিল। সেইসময় প্রভাবশালী বাম নেতা হিসেবে তিনি এই চাকরি ‘করে দিয়েছিলেন’ সুজন বাবুর স্ত্রী মিলি ভট্টাচার্যকে।
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেন বাম নেতা সমীর পুততুণ্ড। শুধু তাই নয়, তার সাফ কথা, “এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না, বাম জমানায় এইভাবে হাজার হাজার চাকরি হয়েছে।” মিলি চক্রবর্তীকে চাকরি দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি অস্বীকার করতে পারব না, আমি ১৯৮৫ সাল থেকে রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলাম। ৯৩ সাল থেকে জেলা সেক্রেটারি হয়েছি। এটা সে সময়েরই ঘটনা, সুজনের বিয়ের আগের ঘটনা। আমায় তখন বারবার ইনসিস্ট করেছিল, মিলির চাকরিটা হয়ে গেলে সুজনদের সুবিধা হবে। তখন গড়িয়ার দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে কাজের একটা সুযোগ ছিল। করে দিলাম।’
বাম নেতা আরও জানান, তিনি প্রশাসনের প্রয়োজনে এবং অন্যের দরকারে নানা সময়ে নানা ক্ষেত্রে নিয়োগ করিয়েছেন। এভাবে কত জনকে চাকরি দিয়েছেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘ওভাবে কি বলা যায় নাকি। কত লোকের চাকরি হয়েছে! সত্যসাধন চক্রবর্তী যিনি প্রাক্তন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন তিনি চেয়ারম্যান হবেন সে সময়ে, তার সুবিধার জন্য করতে হয়েছে কিছু। ইউনিভার্সিটির সেনেট মেম্বার ছিলাম, সে সময়ে ইউনিভার্সিটি চালানোর জন্যও কিছু রিক্রুটমেন্ট হয়েছে। অনেক লোক নিতে হয়েছে প্রশাসনের কাজ চালানোর জন্য। এগুলো সব পার্টিই করে।’
তবে এইসকল চাকররির বিনিময়ে কোনো টাকাপয়সার লেনদেন ছিল না বলেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি। নেতার দাবি, ‘তখনও চাকরির বিনিময়ে টাকা নেওয়ার ব্যাপার চালু হয়নি। আমরা তো ২০০১-এ সিপিএম ছেড়ে দিয়েছি। তার পরে এইসব শুরু হয়েছে।’ এখানেই শেষ নয়, এরপর তিনি আরও বলেন, ‘কোনও রাজনৈতিক দল যখন প্রশাসন চালায়, সারা দেশের সব জায়গাতেই সবাই নিজের দলের লোককে রিক্রুট করে। সেটা কোথাও টাকার বিনিময়ে হয়। আমি বলব, টাকার বিনিময়ের বদলে স্বজন-পোষণ বেশি হয়েছে।’