বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে যুগের সাথে পাল্লা দিয়ে চিনের প্রতিবেশী দেশ ফিলিপিন্স ক্রমাগত তাদের সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে। এদিকে, ভারত (India) কয়েক মাস আগে ফিলিপিন্সের কাছে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ডেলিভারি করেছে। এমতাবস্থায়, গত বুধবার, ফিলিপিন্সের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান রোমিও ব্রোনার জানিয়েছেন যে, ওই দেশ তার অস্ত্রাগারের আধুনিকীকরণের জন্য আরও অস্ত্র কিনতে চায়। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র এবং ভারতের অন্তত ২ টি সাবমেরিন। জানিয়ে রাখি যে, চিনের সাথে ফিলিপিন্সের গুরুতর সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। দক্ষিণ চিন সাগরে দুই দেশই নিজেদের দাপট বজায় রাখতে চাইছে।
চিনের চিন্তা বাড়াচ্ছে ভারতের (India) বন্ধু:
সাবমেরিনের দিকে নজর দিচ্ছে ফিলিপিন্স: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ফিলিপিন্স “হরাইজনস” নামে তার সামরিক আধুনিকীকরণ কর্মসূচির তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। এজন্য ওই দেশ তার প্রতিরক্ষা বাজেটে ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিশাল অর্থের ব্যবস্থা করেছে। এই আধুনিকীকরণের আসল লক্ষ্য হল পড়শি দেশ চিনের সামরিক শক্তিকে মোকাবিলা করা। এই প্রসঙ্গে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক টাইকুনদের সামনে একটি বক্তৃতায় রোমিও ব্রোনার জানান “কমপক্ষে ২ টি সাবমেরিন থাকা আমাদের জন্য একটি স্বপ্ন। আমরা একটি দ্বীপপুঞ্জ। তাই আমাদের সেই ধরণের সক্ষমতা থাকতে হবে। কারণ সাবমেরিন ছাড়া পুরো দ্বীপপুঞ্জকে রক্ষা করা সত্যিই কঠিন।”
ভারত থেকে আরও ব্রহ্মোস মিসাইল কিনবে ফিলিপিন্স: জানিয়ে রাখি যে, ২০২২ সালে ফিলিপিন্স ভারত (India) থেকে ৩৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের ব্রহ্মোস অ্যান্টি-শিপ মিসাইল সিস্টেম কিনেছিল। ভারত (India) ২০২৪ সালে ফিলিপিন্সে ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করে। এদিকে, ওই দেশ ভারত থেকে আরও ব্রহ্মোস মিসাইল কিনতে চায়। ব্রোনার জানান, “আমাদের ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র এই বছর এবং আগামী বছরগুলিতে আরও বেশি প্রয়োজন।” ফিলিপিন্স এর আগে বলেছিল যে তারা তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্তত ৪০ টি যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়া নেভাল করভেট সরবরাহ করবে: প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ফিলিপিন্স এই বছর দক্ষিণ কোরিয়া থেকে অন্তত ২ টি করভেট জাহাজ পেতে পারে। গত বছর উভয় দেশ তাদের সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বে রূপান্তরিত করেছে। ব্রোনার আরও বলেন, ফিলিপিন্স দক্ষিণ কোরিয়াকে দলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। যেটি আসলে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ফিলিপিন্স এবং আমেরিকা নিয়ে গঠিত একটি বহুপাক্ষিক দল। আসলে, দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ায় ফিলিপিন্স তাদের সামরিক প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ফিলিপিন্স ও চিনের মধ্যেও সংঘর্ষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাঁচিয়েছিলেন ঋষভ পন্থের প্রাণ! সেই যুবকই নিলেন চরম সিদ্ধান্ত, মৃত্যুর সাথে লড়ছেন পাঞ্জা
ফিলিপিন্সকে ঘিরে রেখেছে চিন: ব্রোনার বলেন, ফিলিপিন্সের নৌবাহিনী দক্ষিণ চিন সাগরে চীনের “অবৈধ, জবরদস্তিমূলক এবং প্রতারণামূলক” কর্মকাণ্ডের বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছে। আমরা পশ্চিম ফিলিপিন্স সাগরে প্রতিদিন জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি হতেও দেখেছি।” তিনি দক্ষিণ চিন সাগরের জলের জন্য ম্যানিলার শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। যেটি এর বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। তিনি বলেন, ২০২১ সালে ১৯০ টি জাহাজ থেকে, ফিলিপিন্স এখন ম্যানিলার সামুদ্রিক অঞ্চলের আশেপাশে প্রতিদিন গড়ে ২৮৬ টি চিনা জাহাজ দেখতে পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ট্যাক্স স্ল্যাবে হচ্ছে বদল? নতুন আয়কর বিলে ঘটল কী কী পরিবর্তন? বিভ্রান্তি দূর করতে জানুন বিস্তারিত
ফিলিপিন্স আমেরিকার সমর্থন পেয়েছে: ব্রোনার বলেন, দক্ষিণ চিন সাগরে ফিলিপিন্সের আঞ্চলিক জলসীমায় আমেরিকা ও কানাডার সাথে “যৌথ সামুদ্রিক কার্যক্রম” চলছে। তিনি বলেন, ফিলিপিন্স ফ্রান্স, ইতালি এবং আমেরিকার সাথে যৌথ কার্যক্রমের দিকে নজর রাখছে। ব্রোনার এটাও জানান যে, দক্ষিণ চিন সাগরে কার্যকর উপস্থিতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই সব কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে।