বাংলাহান্ট ডেস্ক : ইচ্ছে থাকলে সবই সম্ভব। ইচ্ছে শক্তির কাছে বরাবরই হার মানতে হয় প্রতিকূলতাকে। আবারও সে কথাই প্রমাণ করে দেখালেন পঞ্জাবের (Punjab) একেবারে সাধারণ পরিবারের ছেলে রাজিন্দর গুপ্তা (Rajinder Gupta)। তাঁর জীবনকাহিনী খুব সহজেই হার মানাবে বলিউডের সিনেমাকে।
সালটা ১৯৫৯। একজন তুলা ব্যাবসায়ীর বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন রাজিন্দর। পরিবারে অর্থাভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। তাই খুব বেশিদূর পড়াশুনো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। নবম শ্রেণীতে পড়তে পড়তেই শেষ হয়ে যায় পড়াশোনা। এরপর পরিবারের অর্থ কষ্ট দূর করতে উপার্জনের পথ বেছে নেন রাজিন্দর।
একটা সময় মোমবাতি তৈরি, সিমেন্টের পাইপ তৈরীর মতো কাজে দিনমজুর হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। দৈনিক পারিশ্রমিক হিসেবে সে সময় পেতেন মাত্র ৩০ টাকা। যদিও খুব বেশিদিন এভাবে নিজেকে বন্দী বানিয়ে রাখতে পারেনি গুপ্তা পরিবারের পুত্র রাজিন্দর।
১৯৯৫ সালে সিদ্ধান্ত নেন নিজের ব্যবসা শুরু করবেন। সে বছরই বদলে যায় তার ভাগ্যের চাকা। প্রথমেই একটি সার কারখানা খোলেন তিনি। এরপর ১৯৯১ সালে তৈরি করেন সুতোর কল। সেই থেকেই শুরু হয় তার জীবনের বদল। একের পর এক ব্যবসায় পেতে থাকেন সাফল্য।
এরপর বস্ত্র, কাগজ এবং রাসায়নিকের ব্যবসায় সফল হন রাজিন্দর। তৈরি করে ফেলেন নিজস্ব সংস্থা। জানা যায়, পঞ্জাব এবং মধ্যপ্রদেশে তাঁর সংস্থার বিভিন্ন কেন্দ্র রয়েছে। একটা সময় নিজের সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০২২ সালে সেই পদ থেকে ইস্তফা দেন। বর্তমানে তিনি সামলাচ্ছেন ‘চেয়ারম্যান ইমেরিটাস’ পদের দায়িত্ব।
২০০৭ সালে তিনি ভূষিত হয়েছিলেন পদ্মশ্রী সম্মানে। এক সময় যার দৈনিক মজুরি ছিল ৩০ টাকা আজ তিনি কোটিপতি। রাজিন্দরের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। পঞ্জাবের বাসিন্দারা তাকে ভালোবেসে ধীরুভাই আম্বানি বলে ডাকেন। সাংসারিক জীবন বেশ সুখের রাজিন্দরের। তাঁর পুত্রের নাম অভিষেক গুপ্তা। তিনি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে বহাল রয়েছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পাঞ্জাবের বিভিন্ন বিজনেস স্কুলে ‘কেস স্টাডি’ হিসেবে পড়ানো হয় রাজিন্দরের জীবন বৃত্তান্ত।