পেট্রোল পাম্পের কর্মী থেকে রিলায়েন্সের মালিক, রইল ধীরুভাই আম্বানির উত্তরণের কাহিনী

বাংলা হান্ট ডেস্ক: মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা তথা পৃথিবীর অন্যতম ধনশালী ব্যক্তি বিল গেটস একবার বলেছিলেন যে, “গরিব হয়ে জন্মানোটা কোনো দোষ নয়, কিন্তু গরিব হয়ে মৃত্যুবরণ করাটা অবশ্যই দোষের!” এই আপ্তবাক্যই যেন ছত্রে ছত্রে মিলে যায় দেশের অন্যতম সফল শিল্পপতি ধীরুভাই আম্বানির জীবনের সাথে। দাঁতে দাঁত চেপে কঠোর পরিশ্রম এবং গভীর নিষ্ঠার মাধ্যমে যে শূণ্য থেকে শুরু করে গ্রহের অন্যতম ধনী ব্যক্তিতে রূপান্তরিত হওয়া যায় তার উজ্জ্বল উদাহরণ ধীরুভাই আম্বানি। ১৯৩২ সালে আজকের দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই “বিজনেস টাইকুন”। রূপকথার মতো এই উত্তরণের কাহিনিই চলুন আজ জেনে নিই….

ধীরুভাই আম্বানির আসল নাম ধীরাজলাল হিরাচাঁদ আম্বানি। তৎকালীন ব্রিটিশ শাসিত ভারতের কোরবাদে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বর্তমানে যেটি রয়েছে গুজরাটে। জীবনের এক্কেবারে শুরুর দিকে তিনি ইয়েমেনে পেট্রোল পাম্পে প্রতিমাসে মাত্র ৩০০ টাকার বিনিময়ে কাজ শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রম করে এই সামান্য উপার্জনের চাকরিই তিনি বেশ কয়েকদিন করেন। পরবর্তীকালে ১৯৫৮ সালে তিনি দেশে ফিরে নিজের ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে বস্ত্রশিল্পে নিজের প্রসার বাড়াতে থাকেন ধীরুভাই।

ঠিক এই সময় থেকেই শুরু হয়ে যায় রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির প্রস্তুতিও! রিলায়েন্স কমার্শিয়াল কর্পোরেশনের প্রথম অফিস মসজিদ বন্দরের নরসিনাথ স্ট্রিটে স্থাপিত হয়েছিল। যেখানে ছিল ৩৫০ বর্গফুট বিশিষ্ট ছোট্ট একটি ঘর। পাশাপাশি, সেই অফিসে ছিল একটি টেলিফোন, একটি টেবিল এবং তিনটি চেয়ার। মাত্র দু’জন সহকারী নিয়েই পথচলা শুরু হয় রিলায়েন্সের!

তারপরই একে একে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ শুরু করে রিলায়েন্স। একটা সময়ে দেশের প্রায় প্রতিটি দিকেই উল্লেখযোগ্য ভাবে নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়ে আসেন আম্বানিরা। প্রসঙ্গত, ধীরুভাই আম্বানির চার সন্তান। তাঁরা হলেন মুকেশ আম্বানি, অনিল আম্বানি, দীপ্তি সালগাঁওকর এবং নিনা কোঠারি। তাঁদের মধ্যে মুকেশ আম্বানি ভারতের পাশাপাশি পৃথিবীর অন্যতম ধনী ব্যক্তি। অপরদিকে, ধীরুভাই আম্বানির দুই মেয়ে দীপ্তি সালগাঁওকর এবং নিনা কোঠারি রয়েছেন লাইমলাইট থেকে অনেকটাই দূরে।

IMG 20211228 155726

জীবনে চলার পথে ঝুঁকি নিতে কখনও পিছপা হননি ধীরুভাই। যার ফলে তিনি জয় করেছেন একের পর এক বাধা। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি তিনি গড়েছেন ৬২,০০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পদের সাম্রাজ্য। তাঁর অনবদ্য কর্মদক্ষতায় তিনি ভূষিত হন পদ্মবিভূষণে। ২০০২ সালের ৬ জুলাই সবাইকে ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন তিনি। তবে, শুধু ভারত নয়, বিশ্বের শিল্পমহলেও সদাসর্বদা চিরউজ্বল হয়ে থাকবেন ধীরুভাই আম্বানি!

 

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর