বাংলাহান্ট ডেস্ক: একটি গাঙ্গেয় (Ganges) ডলফিন (dolphin) বা শুশুককে রীতিমতো অত্যাচার করে হত্যা করল একদল যুবক। গোটা ঘটনাটাই রেকর্ড করা হয়েছে ক্যামেরায়। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে ওই যুবকদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি প্রথম জানা যায়, রফিকু সইক নামে এক যুবকের ভিডিও থেকে। ভিডিওতে দেখা যায়, একদল যুবক মিলে একটি শুশুকের ঠোঁট ও লেজ ধরে রীতিমতো অত্যাচার চালাচ্ছে। এই ঘটনা কোথায় ঘটেছে তা সঠিক ভাবে জানা না গেলেও অনুমান করা হচ্ছে কলকাতা ও বর্ধমানের মাঝামাঝি কোনও জায়গায় হুগলী নদীর তীরে রেকর্ড করা হয়েছে এই ভিডিও।
এরপরে ওই যুবক আরও একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে দেখা যায় রক্তাক্ত অবস্থায় ফের নদীতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে শুশুকটিকে। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই প্রখ্যাত পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর প্রতিষ্ঠানের তরফে প্রধান অধ্যক্ষ অরণ্য সংরক্ষকের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটিকে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর কথায়, “আমরা অনুমান করছি কলকাতা ও বর্ধমানের মাঝামাঝি কোনও জায়গায় ঘটেছে এই ঘটনা। আশা করি অপরাধীরা খুব তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে।” তিনি আরও জানান, ওই শুশুকটি আসলে শিশু, মাত্র কয়েক সপ্তাহ বয়েস। এই প্রাণীদের ত্বক খুব সংবেদনশীল হয়। ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে, যেভাবে অত্যাচার করা হয়েছে শুশুকটির ওপর তাতে জলে ছেড়ে দেওয়া সত্ত্বেও তার মারা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এপ্রিলেই খবরে উঠে এসেছিল শুশুকদের হুগলী নদীতে ফেরত আসার কথা। লকডাউনের কারনে দূষণ লক্ষণীয় ভাবে কমে যাওয়াতেই দীর্ঘদিন পর শুশুকরা প্রত্যাবর্তন করে হুগলী নদীতে। তারপর থেকে বহুবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে তারা। কিন্তু এই নিরীহ প্রাণীগুলোর ওপর এমন অত্যাচারের ঘটনা এই প্রথম শোনা গেল।
প্রসঙ্গত, পরিবেশবিদদের মতে বন্যপ্রাণীদের এভাবে ফের লোকালয়ে ফেরত আসায় লকডাউন উঠলে সমস্যাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। লকডাউন চলায় প্রায়ই শোনা যাচ্ছে হাইওয়ে দিয়েই নির্ভয়ে হেঁটে যাচ্ছে বন্যপ্রাণীরা। লকডাউনের পর হঠাৎ করেই গাড়ি চলা শুরু হলে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হবে এই প্রাণীরা। তাই পরিবেশবিদরা অনুরোধ করছেন, লকডাউন ওঠার প্রথম দুই তিন সপ্তাহ একটু সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে।