বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতকালই উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) প্রয়াগরাজে যোগী পুলিশের হেফাজতে থাকাকালীনই এনকাউন্টারে খুন হয়েছে ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদ (Atiq Ahmed) ও তাঁর ভাই আসরফ। ঘটনা ঘিরে উত্তাল গোটা দেশ। এবার এই নিয়েই বিজেপিকে কড়া আক্রমণ শানালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে সওয়াল করলেন এদিন টুইট করেন কুণাল।
যোগী সরকার ও প্রশাসনের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে তিনি বলেন, “পুলিশি হেফাজতের মধ্যে আবার ভয়ঙ্কর হত্যাকান্ড। গোটা রাজ্যের সব জেলায় ১৪৪ ধারা। উত্তরপ্রদেশে ৩৫৬ ধারার পরিস্থিতি কি হয়নি? বিজেপি কী বলে???” এই নিয়েই শুরু রাজনৈতিক তরজা। প্রসঙ্গত, গতকালের এনকাউন্টারের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১৭ জন পুলিশ অফিসারকে সাসপেন্ড করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পাশাপাশি ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ পুলিসকে প্রতি ২ ঘণ্টা অন্তর অন্তর তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছেন যোগী।
জানিয়ে রাখি, গ্যাংস্টার হত্যার ঘটনায় সে রাজ্যের সব জেলাতেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। প্রয়াগরাজে কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির অফিসের বাইরে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। গতকালের এনকাউন্টার নিয়ে প্রশ্ন তোলা নেতাদের উপর নজরদারি রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদিত্যনাথের নির্দেশে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও ডিজিপি।
অন্যদিকে, স্পর্শকাতর এই ঘটনার পর প্রয়াগরাজে বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে যোগী সরকারের ওপর প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। এনকাউন্টারের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজুর আর্জি জানিয়েছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। যোগীর পদত্যাগের দাবিও উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এরই মধ্যে উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির দাবি নিয়ে সরব কুণাল ঘোষ।
গতকাল ঠিক কী ঘটেছিল? গ্যাংস্টার থেকে নেতা হয়ে ওঠা আতিক ও তাঁর ভাই জেলবন্দি ছিলেন। শনিবার প্রয়াগরাজের এক হাসপাতালে তাদের ২ জনকে নিয়ে আসা হচ্ছিল মেডিক্যাল টেস্ট করার জন্য। পথেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাঁরা। দুজনকেই একের পর এক প্রশ্ন করছিলেন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। ছেলে হারানোর শোকে কাতর বাবা তাঁদের প্রশ্নের উত্তরও দিচ্ছিলেন।
হাত বাঁধা অবস্থায় দুই বন্দিকে ভিড় ঠেলে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিস। সেই সময়েই মিডিয়া, পুলিশ সকলের চোখের সামনে ঘটে গেল ভয়ংকর ঘটনা। চলল গুলির পর গুলি। একজন এসে ফিল্মি কায়দায় মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে আতিককে খুন করে। পরক্ষনেই আতিকের ভাই কেউ অন্য একজন গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলি করার পর ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন ঘটনাস্থলে থাকা আতিকের আইনজীবী। গোটা এই খুনের ঘটনা লাইভ সম্প্রচারিত হয় টিভিতে। শনিবার রাতেই হন্যে হয়ে খুনিদের খোঁজ চলেছে। জানা গিয়েছে, সানি, লাভলেশ, অরুণ, এই তিন আততায়ীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।