বাংলা হান্ট ডেস্ক: মহাকুম্ভ এমনই একটি স্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে যেখানে পৃথিবীর সবথেকে বেশি মানুষের সমাগম ঘটেছে। প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে সম্পন্ন হওয়া মহাকুম্ভে দেশ-বিদেশ থেকে মানুষ অংশ নিয়েছেন। যেখানে, ধনকুবেরদের উপস্থিতিও পরিলক্ষিত হয়েছে। সম্প্রতি, মহাকুম্ভে উপস্থিত হয়েছিলেন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানি (Gautam Adani)। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কুম্ভতে উপস্থিত হয়ে তিনি ব্যবসার গুরুমন্ত্র শেখার সুযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সমগ্র পরিবার নিয়ে সেখানে উপস্থিত হওয়া আদানি মহাকুম্ভকে “আধ্যাত্মিক পরিকাঠামো” হিসেবে অভিহিত করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি তাঁর সামগ্রিক অভিজ্ঞতাকে ব্যবসা শেখার ক্ষেত্রে দারুণ সুযোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
কি জানালেন গৌতম আদানি (Gautam Adani):
সম্প্রতি গৌতম আদানি (Gautam Adani) একটি ব্লগ পোস্টে লিখেছেন যে, এই বছর তিনি তাঁর পরিবারের সাথে কুম্ভ মেলায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। যখনই তিনি কারোর সাথে কুম্ভমেলা নিয়ে আলোচনা করতেন, তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের “ভিশন”-এর মাধ্যমে বিস্মিত হতেন। তিনি বলেন যে, “আদানি গ্রুপে, আমরা বন্দর, বিমানবন্দর এবং এনার্জি পার্কের মতো পরিকাঠামো তৈরি করি, কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা কুম্ভের আকারে একটি ‘আধ্যাত্মিক ভিত্তি’ স্থাপন করেছেন, যা আমাদের সভ্যতাকে বহু শতাব্দী ধরে টিকিয়ে রেখেছে।”
বোর্ড মিটিং নেই, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন নেই, “ভারতীয় জুগাড়”-এর শক্তি দৃশ্যমান: মহাকুম্ভের আয়োজন সম্পর্কে, গৌতম আদানি (Gautam Adani) জানান যে, হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল যখন এটির লজিস্টিক সিস্টেম স্টাডি করেছিল, তখন তিনি এটির স্কেল দেখে হতবাক হয়েছিলেন। কিন্তু ভারতীয় হওয়ায় তিনি বিষয়টিকে আরও গভীরভাবে দেখতেন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে সফল টেম্পোরারি মেগাসিটি। প্রতি ১২ বছর পর পর ত্রিবেণীর সঙ্গমে নিউইয়র্কের চেয়ে বড় একটি শহর তৈরি হয়। এর জন্য কোনও বোর্ড মিটিং নেই, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন নেই, কোনও ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট নেই। আদানি জানান, “আমাদের শতবর্ষের অভিজ্ঞতা এবং ভারতের পরীক্ষিত ‘জুগাড়’ (ভারতীয় উদ্ভাবন) কাজে আসে।”
ব্যবসার এই গুরুমন্ত্রগুলি শেখার জন্য উপলব্ধ রয়েছে: এবার মহাকুম্ভে ৪০ কোটি মানুষ অংশগ্রহণ করবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। গৌতম আদানি (Gautam Adani) এই সম্পর্কে লিখেছেন যে, “যখন এত মানুষ উৎসর্গ এবং সেবা নিয়ে এক জায়গায় জড়ো হন, তখন এটি কেবল একটি মেলা থাকে না। বরং, এটি একটি আধ্যাত্মিক সঙ্গমে পরিণত হয়। এটি ‘অর্থনীতির আধ্যাত্মিক স্কেল’। যেটি দেখায় যে এটি যত বড় হবে, তত ভালো হবে। এছাড়া আজকের সময়ে সাস্টেনেবিলিটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা মহাকুম্ভ শেখায়। এটি সার্কুলার ইকোনোমিরে একটি রোল মডেল। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার গুণ শিখতে পারি। বস হওয়া মানে শুধু অর্ডার দেওয়া নয়, বিভিন্ন ধরণের মানুষের সাথে কাজ করার ক্ষমতাও।”
আরও পড়ুন: আম্বানির ওপর আর নেই ভরসা? রিলায়েন্স থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা, সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
তিনি (Gautam Adani) আরও বলেছেন যে, “ভারত যখন নিজেকে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার জন্য কাজ করছে, তখন কুম্ভ মেলা “অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃদ্ধির” পাঠ শেখায়। যেখানে রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সিইও কিংবা বিদেশি সবাই গ্রহণযোগ্য। আজ আমরা ডিজিটাল উদ্ভাবন করেছি, কিন্তু কুম্ভের প্রাচীন পদ্ধতি আমাদের মানব আত্মার ব্যবস্থাপনার পাঠ শেখায়। এটি এমন সময়ে প্রয়োজনীয় যখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় হুমকি হল মানসিক রোগ। শুধু তাই নয়, কুম্ভ মেলা আপনাকে আপনার সংস্কৃতি নিয়ে গর্বিত হতে অনুপ্রাণিত করে এবং এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলে যেটি শতাব্দী ধরে চলতে থাকে। এটি ভারতের সবচেয়ে বড় সফট পাওয়ারকেও প্রতিফলিত করে।”