বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও বাংলায় নারকীয় ধর্ষণকাণ্ডের শিকার কিশোরি। মাটিয়ার পর এবার ঘটনাস্থল মালদহ। হাত পা বেঁধে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নির্যাতন চালানো হয় কিশোরীর উপর। ঘটনায় অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা। এহেন পাশবিক ঘটনার পর কার্যতই তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়।
সূত্রের খবর, এই বছরই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে নির্যাতিতা কিশোরী। সংসারে চরম টানাটানি থাকলেও মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করেননি দিনমজুর বাবা। এদিন ঘটনার সময় কাজে বেরিয়েছিলেন তিনি। বাড়িতে ছিলেন না নির্যাতিতার মা ও। ওই সময় ফাঁকা বাড়িতে একটি বিছানায় শুয়ে ছিল কিশোরী। আর সেই সুযোগ নিয়েই ঘরে ঢুকে পড়ে অভিযুক্ত। তারপর কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে পাশবিক অত্যাচার চালানো হয় ছোট্ট মেয়েটির উপর। তার আর্ত চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু ততক্ষনে যা হবার তা হয়ে গিয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে বিছানা। বিছানায় পড়ে কাতরাচ্ছে কিশোরী।
মেয়েকে এহেন ভয়াবহ অবস্থায় দেখে কার্যতই স্তম্ভিত হয়ে যান বাবা মা। আদরের সন্তানকে যন্ত্রনায় কাতরাতে দেখে ডুকরে কেঁদে ওঠেন তাঁরা। সামান্যতমও সময় নষ্ট না করে তাকে নিয়ে ছোটা হয় স্থানীয় হাসপাতালে।
নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন,’ আমি যখন কাজে গিয়েছিলাম মেয়ে বাড়িতে একা ঘুমোচ্ছিল। মেয়ে বলছে, সেই সময় ঘরে ঢুকে ওর কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে ওকে ধর্ষণ করে ছেলেটা। ওর খুড়তুতো দাদা সিভিক ভলেন্টিয়ার। সে বাইরে গার্ড দিয়েছে। তারপর পালাতেও সাহায্য করেছে ছেলেটাকে।’
ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ইংলিশবাজার থানায়। জানা যাচ্ছে অভিযুক্ত যুবক স্থানীয় তৃণমূল নেতা। তার দুই সিভিক ভলেন্টিয়ার দাদা তাকে পালাতে সাহায্য করেছে বলেও অভিযোগ। যদিও এখনও অবধি কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। কোনও রকম প্রতিক্রিয়াও অবশ্য পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার তরফে। এই প্রসঙ্গে মালদহের তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরী জানিয়েছেন, দোষী যে দলেরই হোক, কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না তাকে।
একের পর এক ধর্ষণ কাণ্ড রাজ্যজুড়ে। পাশবিক, নারকীয়, জঘন্য, ঘৃণ্য যে বিশেষনেই বিশেষিত করা হোক, কম পড়ে যায় যেন সবকিছুই। এই ঘটনায় স্পষ্টতই আরও একবার সামনে উঠে এল রাজ্যে নারী নিরাপত্তার আসল ছবি। যেখানে নিজের বাড়িতে নিজের ঘরেই নিরাপদ নয় কিশোরী, সেখানে খোলা রাস্তায় কিংবা বাড়ির বাইরে ঠিক কতখানি নিরাপদ বাংলার নারীরা? উঠছে প্রশ্ন।