Exclusive: জোর করে নাবালিকাদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভাঙড়ে! নাম জড়াল শাসক দলের কর্মীদের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই একাধিক জনহিতকর প্রকল্প শুরু করেছেন রাজ্যবাসীর জন্য। পাশাপাশি, সেইসব প্রকল্পগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প শুধুমাত্র মহিলাদের কথা মাথায় রেখেই চালাচ্ছে সরকার। এছাড়াও, বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় থেকেই “কন্যাশ্রী” থেকে শুরু করে “সবুজ সাথী”-র মতো প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছে ছাত্রীরা।

এমনকি, পড়াশোনার মাঝে নাবালিকাদের বিয়ে রুখতেই কার্যত শুরু করা হয় “কন্যাশ্রী” প্রকল্পটি। কিন্তু, এই আবহেই রাজ্যে খোঁজ মিলল অন্য ছবির। একের পর এক নাবালিকাকে বিয়ে দেওয়া দেওয়ার মত ঘটনা ঘটল দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। শুধু তাই নয়, এই নিন্দনীয় ঘটনায় নাম জড়াল একাধিক শাসক দল ঘনিষ্ঠ লোকজনের।

   

ঠিক কি ঘটেছে?
জানা গিয়েছে যে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় অভিযোগের তির উঠেছে সাদ্দাম মোল্লা ও মসলেম মোল্লা নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, অভিযুক্তদের মাথায় স্বয়ং তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের “হাত” রয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। একটি অভিযোগের ভিত্তিতেই এই পুরো ঘটনাটি সামনে আসে।

WhatsApp Image 2022 05 09 at 9.53.06 PM

মূলত, দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “সারথী ট্রাস্ট”-এর সদস্যা রিয়া খান সরাসরি ভাঙড় থানা ও জেলাশাসককে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগের মূল বিষয়বস্তু হল, “গত কয়েক মাস ধরে টাকার বিনিময়ে গ্রামের কিছু কু-চক্রের সহযোগিতায় নাবালিকাদের রাতের অন্ধকারে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি, স্কুলও যেতে দেওয়া হচ্ছে না তাদের। স্বাভাবিকভাবে অল্প বয়সে গর্ভবতী হয়ে যাচ্ছে নাবালিকারা।” পাশাপাশি রিয়া আরও জানান, “আমরা বহুবার ১০৯৮ ও শিশু সুরক্ষা দফতরে অভিযোগ করেছি। কিন্তু, এখন এফআইআর এর দিকে এগোতে বাধ্য হলাম। কারণ পুলিশ যখনই আসছে তখন অভিযুক্তরা লুকিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই আমরা দু’জনের নাম উল্লেখ করে ভাঙড় থানাকে জানিয়েছি।”

WhatsApp Image 2022 05 10 at 2.38.01 PMপাশাপাশি, তিনি আরও জানান, “রাতের অন্ধকারে পিকনিকের মত বিয়ের আয়োজন করে সেখানে পাত্র-পাত্রী কে নিয়ে এসে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে নাবালিকারা যাতে নির্ভয়ে স্কুলে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে।”

WhatsApp Image 2022 05 10 at 2.38.00 PM

এদিকে, এই নিন্দনীয় ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করে তা মেনে নিয়েছেন গ্রামের পঞ্চায়েত মেম্বার রেজাউল মোল্লা। তিনি জানিয়েছেন, “এই কাজ বহুদিন ধরে হচ্ছে। আমরা বন্ধ করতে পারছি না”। যদিও, এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত সাদ্দাম মোল্লা বলেন, “আমরা জুতোর কারখানায় সারাদিন কাজ করি। রাত ১০ টা তে বাড়ি ফিরি। আমাদের নাম দিয়ে কেউ চক্রান্ত করছে। আমরা কোনোভাবেই এর সাথে যুক্ত নেই”।

WhatsApp Image 2022 05 10 at 2.38.02 PM

এদিকে, ভাঙ্গড় থানার আইসি রেজাউল করিম জানান, “এই ঘটনা জানার সাথে সাথে আমাদের দু’টি টিম গ্রামে গিয়ে তদন্ত করেছে। এমনকি, সেই পাত্র-পাত্রীর পরিবারের সাথে কথা বলে থানায় ডেকেও পাঠানো হয়েছে। তবে, অভিযুক্তদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না”। এই বিষয়ে রাজ্য শিশু সুরক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, “আমরা ইতিমধ্যেই প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। পরবর্তীতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে”। পাশাপাশি, এই ঘটনায় এলাকার বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “বিষয়টা আমরা শুনেছি, খুব দ্রুত এই বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে অভিযোগ করতে চলেছি।”

 

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর