বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার বড়সড় সাফল্য পেলেন সেন্ট্রাল দিল্লির অপারেশন সেলের স্পেশাল সদস্যরা। জানা গিয়েছে, গত ৩১ আগস্ট ভোররাতে পাহাড়গঞ্জে হওয়া ভয়াবহ ডাকাতির (Delhi Robbery) এবার কিনারা করা গেছে। মোট ৫ জন দুষ্কৃতী যুক্ত ছিল ওই ডাকাতিতে। খবর অনুযায়ী, মুম্বাই ভিত্তিক কুরিয়ার কোম্পানি “জয় মাতা দি”-র একটি অফিস পাহাড়গঞ্জের দারিবাপন গলিতে অবস্থিত রয়েছে। সেখানকার দু’জন কর্মচারী গহনার ব্যাগ নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ানো একটি গাড়িতে ডেলিভারির জন্য যাচ্ছিলেন। সেই সময় হঠাৎ পাঁচজন দুষ্কৃতী এসে তাঁদের পথ আটকে দেয়।
এমনকি, দুষ্কৃতীদের মধ্যে একজন পুলিশের ইউনিফর্ম পরে ছিল বলেও জানা গিয়েছে। মূলত, ওই পাঁচজন চেকিংয়ের নামে উভয় কর্মচারীকে থামিয়ে তাঁদের চোখে লংকার গুঁড়ো ছিটিয়ে দেয়। এমতাবস্থায়, ওই কর্মচারীদের কাছ থেকে অলঙ্কার ভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এদিকে, এই দুঃসাহসিক ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে।
সমগ্ৰ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তারপরেই ওই ফুটেজ থেকে জানা যায় যে, অভিযুক্তরা প্রায় ৫ দিন ধরে ওই কোম্পানির কর্মচারীদের লক্ষ্য রাখছিল। শুধু তাই নয়, ওই তদন্তে, পুলিশ এমন একটি ফুটেজ পায় যেখানে দেখা যায় যে, দুষ্কৃতীরা ডাকাতির কয়েকদিন আগে এক ট্যাক্সি ড্রাইভারের সাথে কথা বলছিল। এমতাবস্থায়, পুলিশ ওই ট্যাক্সি চালককে খুঁজে বের করে।
এদিকে, ওই ট্যাক্সি চালককে পাওয়া মাত্রই এই ডাকাতির গোটা রহস্য উন্মোচিত হয়। ওই চালক জানিয়েছেন যে, অভিযুক্তরা তাঁকে Paytm-এর মাধ্যমে ১০০ টাকা ট্রান্সফার করেছে। এমতাবস্থায়, যে নম্বরে Paytm থেকে টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছিল, সেই নম্বরকে ট্র্যাক করে নম্বরের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়। পাশাপাশি, পুলিশ লোকেশন দেখে বুঝতে পারে যে ঐ দুষ্কৃতীরা রাজস্থানে রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে ডিস্ট্রিক্ট ডিসিপি শ্বেতা চৌহান জানিয়েছেন, এসিপি (অপারেশন) অজয় কুমার সিং অত্যন্ত পেশাদার পদ্ধতিতে এই পুরো তদন্তটি করেছেন। তিনি তাঁর অভিজ্ঞ ইন্সপেক্টর সন্দীপ গোধরাকে পুরো টিম সহ অভিযানের জন্য রাজস্থানে পাঠান। গত শুক্রবার রাজস্থানে পৌঁছনোর পরে, একটি ফ্ল্যাটে লুকিয়ে থাকা তিন দুষ্কৃতী নাগেশ, শিবম, মনীশকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি, তাদের বয়ান অনুযায়ী, হরিয়াণার ঝাজ্জার এলাকা থেকে সমস্ত চুরি হওয়া জিনিস উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, প্রায় ৬ কোটি টাকার জিনিসপত্র ডাকাতি করে তারা। আর এভাবেই দিল্লির সবচেয়ে বড় ডাকাতির ঘটনার তদন্তে সাফল্য পেল পুলিশ।