বাংলাহান্ট ডেস্কঃ COVIED-19 এর জেরে সারা বিশ্ব যখন তোলপাড়। চলছে লকডাউন। আর পরিযায়ী শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে জন্ম দিয়েছে শিশু কন্যার। এক প্রসূতি তাঁর সদ্যোজাত সন্তানের নাম রেখেছেন করুণা। আবার রিনা নামের এক মা সদ্যজাতের নাম দিয়েছেন আবার লকডাউন যাদব। এই দুই শিশুসন্তানের মধ্যে মিল একটাই। সাম্প্রতিক করোনা বিপর্যয় সময়ে, লকডাউনের মধ্যেই, একরাশ অনিশ্চয়তায় জন্ম হয়েছে তাদের চলন্ত ট্রেনে। যে ট্রেনের পোশাকি নাম ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ (‘Workers Special’)।
ভারতীয় রেলের এক মুখপাত্র আর ডি বাজপেয়ীর কথায়, “আমাদের এই পরিষেবা সবসময়ই ছিল। ট্রেনে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি সহায়তা পেয়েছেন আগেও। আমাদের টিম অনেক বারই এ বিষয়ে ভাল কাজ করেছে। কিন্তু এই ঘনাগুলি অনন্য। এতজন শিশুকে পৃথিবীর আলো দেখাতে পেরেছি আমরা, মা-সন্তান ভাল রয়েছেন, এমন আনন্দ আর হয় না।”
ভোপালে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন ঈশ্বরী ও রাজেন্দ্র। গত বছর গর্ভধারণ করেছিলেন। তখন জানতেন না, সন্তানের জন্মটাই অনিশ্চিত হয়ে যাবে। আচমকা লকডাউনে সারা দেশের অভিবাসী শ্রমিকদের মতোই আচমকা রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। খাবার জোটানোই দায়। এদিকে ঈশ্বরী ভরা পোয়াতি। কোনও ভাবে গ্রামে ফিরতে পারলে অনেকটা সুরাহা হয়, আপনজনেরা আছেন সেখানে।
আর এক অন্তঃসত্ত্বা শ্রমিক রিনা আবার মুম্বই থেকে ফিরছিলেন উত্তরপ্রদেশ। তিনিও চরম কষ্টে মাসখানেক কাানোর পরে কোনও রকমে বাড়ি ফেরার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁর সন্তানও জন্মায় ট্রেনেই। লকডাউনে অবরুদ্ধ দেশে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে চলন্ত অবস্থায় জন্ম নেওয়া সে সন্তানের নামই হয়ে যায় লকডাউন!
সারা দেশে যখন করোনা আতঙ্ক ক্রমে বাড়ছে, মৃত্যুমিছিল ছাড়াচ্ছে কয়েক হাজার, লকডাউনের বন্দিদশা প্রাণ কাড়ছে আরও বহু মানুষের, তখন এতগুলি নবজীবন যেন ভারতীয় রেলের আরও অনেক সাফল্যের মধ্যে একটি।