বাংলাহান্ট ডেস্ক: গুগলের (Google) জন্য চরম খারাপ দিন আসতে চলেছে! আর মাত্র দুই থেকে আড়াই বছর। তারপরেই চিরতরে হারিয়ে যেতে বসেছে বিশ্বের বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিনটি। এমন আশঙ্কাই করছেন জি-মেলের প্রতিষ্ঠাতা পল বুখেইট। তবে এমন কেন বললেন তিনি? টেক দুনিয়ায় এখন সকলের মুখে ঘুরছে একটাই নাম, ChatGPT। কী এই চ্যাট জিপিটি? কেনই বা এটি গুগলের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে? আজকের প্রতিবেদনে আমরা আপনাকে জানাবো সব কিছু বিস্তারিত।
প্রযুক্তি প্রেমীদের মুখে মুখে এখন ChatGPT’র নাম ঘুরছে। বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি প্রেমীরা এর জন্য পাগল হয়ে গিয়েছে। এই জিনিস ঘিরে উন্মাদনা রয়েছে চরমে। আপনিও এই জিনিসের ব্যাপারে জানলে অবাক হতে বাধ্য। বর্তমান সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই গবেষণা চলছে। এই প্রযুক্তি দিয়ে বিভিন্ন জিনিসও তৈরি করা হয়েছে। এগুলি বাস্তবে ব্যবহৃতও হচ্ছে।
তেমনই একটি গবেষণার ফল হল চ্যাট জিপিটি। এটি হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি একটা চ্যাট বট সার্ভিস। এটির মাধ্যমে যে কোনও বিষয়ে একেবারে মৌলিক প্রবন্ধ লিখে ফেলা সম্ভব। আপনার চাকরির জন্য রেস্যুমে থেকে কভার লেটারও বানানো সম্ভব এই বটের মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্য আপনাকে তৈরি হতেও সাহায্য করবে চ্যাট জিপিটি।
এগুলির পাশাপাশি কবিতা এমনকী গানও লিখে ফেলতে পারে ChatGPT। এতটাই শক্তিশালী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এটি তৈরি করতে। ধরা যাক আপনি কম্পিউটারের কোডিং জানেন না। কোড লিখতে পারেন না। এই বটের মাধ্যমে সহজেই আপনি জটিল সব কোড লিখে ফেলতে পারবেন। নানা ধরনের জটিল অঙ্কও কষে ফেলতে পারে এই বটটি।
কাউকে কোনও উপহার দেবেন ভাবছেন? কিন্তু কী দেওয়া উচিত জানেন না? চিন্তা নেই। চ্যাট জিপিটিকে জিজ্ঞেস করলেই আপনাকে বলে দেবে পছন্দের মানুষের জন্য কী উপহার আপনি দিতে পারেন। পাশাপাশি, আপনি যদি একাকিত্ব অনুভব করেন, তাহলেও আপনাকে সঙ্গ দেবে এই বট। অবিকল মানুষের মতোই এর সঙ্গে গল্প করতে পারবেন আপনি।
তবে এটি গুগলকে কী ভাবে ধ্বংস করতে পারে? বর্তমানে আমরা যে কোনও জিনিসের সমাধান খুঁজতে গুগলে সার্চ করি। তার মাধ্যমে অনেকগুলি লিঙ্ক থেকে পড়াশোনা করে কষ্ট করেই নিজেকে জিনিসপত্র লিখতে হয়। কিন্তু চ্যাট জিপিটি ব্যবহার করলে আপনি সহজেই সেই জিনিসটি লিখে ফেলতে পারবেন। বটই আপনার হয়ে লিখে দেবে। ফলে মানুষ আর কষ্ট করে গুগলে সার্চ করবেন না।
চ্যাট জিপিটি লঞ্চ হওয়ার প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই ১০ লক্ষ ব্যবহারকারী ছাড়িয়েছে। এই কারণে বিশেষজ্ঞদের মতে, অচিরেই শেষ হয়ে যেতে পারে গুগল। মানুষ গুগল সার্চ না করলে সংস্থার অনেক আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। কারণ গুগলের অনেকটা আয়ই হয় গুগল সার্চের মাধ্যমে। তাই চ্যাট জিপিট গুগলের বিকল্প হয়ে উঠতে পারলে আর কেউ গুগলে সার্চ করবে না। ফলে আর্থিক দিক থেকে ধাক্কা খাবে গুগল।
বিশেষজ্ঞরা আরও জানাচ্ছেন, চ্যাট জিপিটি ওয়েব সার্চের মডেলটিকেই ধ্বংস করে দিতে পারে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, চ্যাট জিপিটিকে রুখতে গুগলের ইঞ্জিনিয়াররা বিভিন্ন উপায় খুঁজছেন। এছাড়াও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে গুগল। চলতি বছরে প্রায় ২০টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি পরিষেবার পরীক্ষাও করবে। উল্লেখ্য, চার বছর আগে চ্যাট জিপিটিতে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছিল মাইক্রোসফট। এ বার তাদের এই সাফল্য দেখে আরও ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছে বিল গেটসের (Bill Gates) সংস্থা।