বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কারণে আবাস যোজনায় (Awas Yojana) একলা চলো নীতি অনুসরণ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government of West Bengal)। গত ডিসেম্বর মাসে আবাস প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা পাঠিয়েছে রাজ্য। এরপর থেকেই সামনে আসছে নানান ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ। এবার যেমন তার সূত্রেই গ্রেফতার করা হল একজনকে। ইতিমধ্যেই তা ঘিরে কার্যত শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
আবাস (Awas Yojana) তালিকায় ‘দুর্নীতি’! পুলিশের জালে কে?
বাংলা আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) (Bangla Awas Yojana) প্রকৃত প্রাপকদের নামের তালিকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আগেই উঠেছিল। বনগাঁ ব্লকের দু’জন সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। গত বৃহস্পতিবার বনগাঁর বিডিও কৃষ্ণেন্দু ঘোষ তাঁদের বিরুদ্ধে গোপালনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অনুযায়ী শুরু হয় তদন্ত। এরপর তদন্ত সূত্রে শুক্রবার বিশ্বজিৎ মিত্র নামের বনগাঁ শহরের শক্তিগড় অঞ্চলের একজন বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, বনগাঁ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) পরিচালিত বৈরামপুর পঞ্চায়েত অঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার কাজ করছিলেন বিশ্বজিৎ। অভিযোগ ওঠে, আসল প্রাপক দীপ্তি বিশ্বাসের বদলে তিনি দীপ্তি অধিকারীর নাম তালিকায় তুলে দিয়েছিলেন। সেই দীপ্তিদেবীর অ্যাকাউন্টে আবাস যোজনার প্রথম কিস্তির টাকাও ঢুকেছিল। তবে পরবর্তীতে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর ব্যাঙ্কে চিঠি দিয়ে টাকা ফিরিয়ে নেয় প্রশাসন।
আরও পড়ুনঃ ফের শিরোনামে আরজি কর! অপারেশন টেবিলে বিকল হয়ে গেল ‘যন্ত্র’! তারপর যা হল…
এবার সেই বিশ্বজিৎকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার তাঁকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাঁকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, আরেকজন অভিযুক্ত সঞ্জয় বসু পলাতক। সঞ্জয়ের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।
এদিকে এলাকাবাসীর কথায়, ধৃত বিশ্বজিৎকে সমীক্ষার (Awas Yojana) জন্য বাইকে করে কেউ বা কারা এসে নিয়ে যেতেন। কাজ হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে আবার বনগাঁয় নামিয়ে দেওয়া হতো। এদিকে এমনটা হওয়ার কথা নয়! সরকারি কর্মী বিশ্বজিতের নিজের মতো করে অথবা সরকারি গাড়ি করে সমীক্ষার জন্য যাওয়ার কথা। বৈরামপুর অঞ্চলে তাঁর জন্য পান-ভোজনের ভালো বন্দোবস্ত থাকতো বলে অভিযোগ। ‘উপহার’ হিসেবে বেশ কিছু জিনিসও পেয়েছিলেন তিনি।
অভিযোগ উঠছে, বিশ্বজিৎ আবাস যোজনার (Awas Yojana) তালিকা নিয়ে যে ‘কাণ্ড’ ঘটিয়েছেন সেটা জনপ্রতিনিধিদের একাংশের প্রলোভনে পা দিয়ে। এর সঙ্গে কোনও আর্থিক যোগসূত্র রয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই বিষয়ে প্রশাসনের একজন কর্তা বলেন, ‘সমীক্ষার সময় কেউ কোনও চাপ অথবা প্রলোভন তৈরি করলে আমাদের সেটা জানানো উচিত ছিল। কিন্তু বিশ্বজিৎ সেটা করেননি’। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছেন কিনা সেটা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।