বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক অতীতে শহর কলকাতার একাধিক বহুতল হেলে পড়ার ঘটনা সামনে এসেছে। যা ঘিরে জোর শোরগোল পড়ে যায়। এই আবহে এবার কড়া পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government of West Bengal)। ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে নয়া বিজ্ঞপ্তি। রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফ থেকে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
হেলে পড়া বাড়ি রুখতে বিরাট পদক্ষেপ রাজ্যের (Government of West Bengal)!
রাজ্যের নানান প্রান্তে পুকুর বুজিয়ে আবাসন তৈরি হতে দেখা যায়। এবার এই নিয়ে নজরদারি বাড়াতে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফ থেকে জারি করা হল বিজ্ঞপ্তি। রাজ্যের কোথাও পুকুর অথবা জলাশয় বুজিয়ে অবৈধভাবে বাড়ি (Illegal Construction) বানানো হচ্ছে কিনা তার ওপর নজরদারি বাড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোথাও যদি পুকুর অথবা জলাশয় বুজিয়ে বাড়ি তৈরি করা হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় পুরসভাকে ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, এবার থেকে আর কোনও পুরসভা জলাশয় বোজানোর অনুমতি প্রদান করতে পারবে না।
জানা যাচ্ছে, পুকুর অথবা জলাশয় বোজানোর পর অনেকে সেটির কনভারশন করিয়ে নেন। ফলে খাতায় কলমে বদলে যায় ওই জমির চরিত্র। সরকারি নিয়ম বলছে, জমি যদি ৩ কাঠার কম হয়, তাহলে বিএলআরও অফিস থেকে কনভারশন করানো যায়। তবে তার চেয়ে বেশি হল ডিএলআরও অফিস থেকে কনভারশন করাতে হয়। সেক্ষেত্রে ফিশারিজ অ্যাক্ট অনুসারে এডিএম-এলআরের (ফিশারিজ) থেকে শংসাপত্র নিয়ে হয়।
আরও পড়ুনঃ দিল্লিতে গেরুয়া ঝড়! প্রভাব পড়বে বাংলার ভোটে? ছাব্বিশের নির্বাচন নিয়ে বিস্ফোরক মমতা
এদিকে অভিযোগ, নিয়মে একথা বলা হলেও এক শ্রেণির অসাধু প্রোমোটার পুকুর অথবা জলাশয় বুজিয়ে সেগুলিকে কনভারশন করে ডাঙা জমি করিয়ে নিচ্ছে। এবার এই নিয়েই রাজ্যের (Government of West Bengal) তরফ থেকে পুরসভাগুলিতে বাড়তি সতর্ক হতে বলা হল।
পুর দফতর জানিয়েছে, প্রত্যেক জমির কাগজপত্র ভালো করে খতিয়ে দেখার পর সেখানে বাড়ি তৈরির ছাড়পত্র দেবে পুরসভা। পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা বাড়ির ভিত তৈরির সময় থেকে নজরদারি চালাবেন। এরপর বাড়ি নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হলে, পুরসভা প্রথমে ইঞ্জিনিয়ারদের প্রদান করা স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি সার্টিফিকেট ভালো করে দেখবে। সেখানে সব ঠিকঠাক থাকলে অক্যুপেন্সি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এই শংসাপত্র না থাকলে নবনির্মিত ওই বাড়িতে পানীয় জল এবং নিকাশির কানেকশন মিলবে না।
এর পাশাপাশি আরও বেশ কিছু নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য (Government of West Bengal)। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বাড়ির উচ্চতা যদি ১০ মিটারের বেশি হয় (পাহাড়ি অঞ্চলের ক্ষেত্রে ৬.৫ মিটার) তাহলে অবশ্যিকভাবে সয়েল টেস্ট করাতে হবে। তবে বাড়িতে যদি আন্ডারগ্রাউন্ড স্ট্রাকচার থাকে ও সেই বাড়ি কোনও জলাশয়ের ১৫ মিটারের মধ্যে অবস্থিত হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে ভিত তৈরির আগেই সয়েল টেস্ট করাতে হবে।
রাজ্যের (Government of West Bengal) এই পদক্ষেপ সম্বন্ধে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, সম্প্রতি যতগুলি বহুতল হেলে পড়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, তার মধ্যে প্রায় প্রত্যেকটি পুকুর ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে। সরকারি ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের কথায়, পুকুর বোজালে বহুদিন অবধি সেখানকার মাটি নরম থাকে। ফলে ঠিক ভাবে পাইলিংয়ে ভিত শক্তপোক্ত না হলে মাটি বসে সম্পূর্ণ বাড়িটাই নেমে যেতে পারে। সেই কারণে এবার কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হল। রাজ্যের পুরসভাগুলিকে দিয়ে দেওয়া হল নির্দেশ।