বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দেশ জুড়ে বহু সংখ্যক গ্রাহক প্রতিনিয়ত রেশন (Ration) ব্যবস্থার মাধ্যমে উপকৃত হয়ে চলেছেন। ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গও। তবে ইদানিং রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে চালু করা হয়েছে আধার-বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা। তারপর থেকে পশ্চিমবঙ্গে রেশন কার্ডের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। রিপোর্ট বলছে আগে রাজ্য সরকারের অন্তর্গত প্রায় ১০ কোটি ৬০ লক্ষ ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু ছিল। কিন্তু আধার-বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর বৈধ রেশন কার্ডের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯ কোটি ১২ লক্ষ।
রেশন (Ration) নিয়ে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিল রাজ্য
দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করার কারণে বাকি রেশন (Ration) কার্ডগুলি সরকারের তরফ থেকে সাময়িকভাবে ব্লক বা নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, প্রায় চার বছর ধরে এই কার্ডগুলি নিষ্ক্রিয় রয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেশন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী সাশ্রয় করে সরকারি তহবিলের অর্থ বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে। আর এবার রাজ্যের দেখাদেখি একই পথ অনুসরণ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
রাজ্যবাসীর জন্য একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমনই রাজ্যের যে সমস্ত বাসিন্দাদের কাছে খাদ্য সাথী প্রকল্পের আওতার ডিজিটাল রেশন (Ration) কার্ড রয়েছে তাঁরা বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী পেয়ে থাকেন। কিন্তু এই রেশন ব্যবস্থা পরিচালনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্র বনাম রাজ্যের সংঘাত কিন্তু লেগেই রয়েছে। তাই রাজ্যগুলিকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা নিতে বলেছে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রেশন (Ration) ব্যবস্থা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আপত্তি জানালেও, রেশন কার্ড নিষ্ক্রিয় রাখার ব্যাপারে একমত হওয়ার কথা এবার লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রকে।
আরও পড়ুন: তৃণমূল পার্টি অফিসে ডেকে যুবতীকে ‘ধর্ষণ’! এবার হাইকোর্টে দায়ের মামলা, চাপে শাসক শিবির
সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারগুলির কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে রেশন ব্যবস্থা সংক্রান্ত যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, ছ’মাস ধরে রেশনের খাদ্য সামগ্রী না তুললে তাঁদের কার্ড নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হবে। এরপর ওই গ্রাহকদের তিন মাস সময় দেওয়া হবে। ওই সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথি পেশ এবং ‘ই-কেওয়াইসি’ করলে গ্রাহকদের রেশন কার্ড আবার চালু করা যাবে। অর্থাৎ গ্রাহকের আধারের বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করা হবে।
জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রের দেওয়া এই প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে রাজ্য। যদিও এই কন্ট্রোল অর্ডার চালু হওয়ার অনেক আগেই ২০২১ সালে রাজ্যের খাদ্যদপ্তর রেশন কার্ড ব্লক করার ব্যবস্থা চালু করেছিল। যার ফলে মাত্র কয়েকমাসের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি রেশন কার্ড ব্লক হয়ে গিয়েছিল। প্রসঙ্গত, গত বছর রাজ্য সরকার যে ‘পিডিএস কন্ট্রোল অর্ডার’ চালু করা হয়েছে তাতে উল্লেখ্য করা হয়েছে, কোনও রেশন গ্রাহক দু’মাস ধরে খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ না করলে তাঁর কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। পরবর্তী ছ’মাসের মধ্যে ওই গ্রাহক কার্ড সক্রিয় না করলে কার্ড পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে। তবে এরপর খাদ্যদপ্তরের স্থানীয় অফিস অথবা রেশন দোকানের ই-পস মেশিনের মাধ্যমে আধারের বায়োমেট্রিক যাচাই করিয়ে আবার কার্ড ফের চালু করতে পারবেন গ্রাহকরা।