বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সূচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর চালু করা রাজ্যের সুপারহিট প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি হল লক্ষ্মীর ভান্ডার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের এই প্রকল্পের (Lakshmir Bhandar) মাধ্যমে প্রতি মাসের আর্থিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয় বাংলার মহিলাদের ঘরে ঘরে। কিন্তু এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাবনা কোথা থেকে? এবার এই নিয়েই মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
নিউজ ১৮ বাংলায়কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মমতা বলেন, ‘দিদিরা মায়ের বোনেরা সবসময় সঞ্চয় রাখতেন, যখন কোনো সমস্যা দেখা দিতে হাতে পয়সা নেই, তখন তাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ভেঙে পয়সাটা খরচ করতেন। সেই থিম থেকে এই প্রকল্প। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে গর্বিত। বর্তমানে বাংলার প্রায় ১ কোটি ২১ লক্ষ মেয়েরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাচ্ছে। সারা জীবন ভাতার টাকা পাবেন। এর জন্য আমাদের প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ভালো জিনিস কেউ যদি কপি করে তবে তাকে স্বাগত জানানো দরকার। আমাদের কোনও রেস্ট্রিকশন নেই। দুচাকার বাইক থাকলেও। স্মার্ট ফোন বা পাকা বাড়ি থাকলেও পাবে। আমাদেরটা সর্বজনীন। প্রসঙ্গত, রাজ্যের সব থেকে জনপ্রিয় প্রকল্প গুলির মধ্যে একটি এই লক্ষ্মীর ভান্ডার। বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মহিলারা মাসে ১২০০ এবং সাধারণ সম্প্রদায় অর্থাৎ জেনারেল ক্যাটাগরির মহিলারা ১০০০ টাকা করে পান।
প্রতি মাসের শুরুতেই মহিলাদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যায় ভাতার টাকা। নভেম্বর মাস শেষ হয়ে ডিসেম্বর শুরু হয়েছে। প্রতি মাসের মতোই এইমাসেও উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে যাবে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা। জানিয়ে রাখি, মাসের প্রথম সপ্তাহে অথবা ২ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে এই টাকা সবার অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে শুরুর সময় এই প্রকল্পের আওতায় মাসিক পাঁচশো টাকা করে ভাতা পেতেন রাজ্যের মহিলারা। তারপর ধীরে ধীরে বেড়েছে ভাতার পরিমাণ। গত সপ্তাহেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবারে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আরও পাঁচ লক্ষ মহিলার নাম। ডিসেম্বর মাস থেকেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের নতুন উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভাতার টাকা ঢুকে যাবে।
আরও পড়ুন: কনফার্ম খবর! ডিসেম্বরেই কপাল খুলবে এই সরকারি কর্মীদের, সামনে বড় আপডেট
সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী এবং দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য অনেক নতুন আবেদন এসেছে। তাদের সকলকে এই প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে। নতুন উপভোক্তার সংখ্যাটা ৫ লক্ষ ৭ হাজার। সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলার ২ কোটি ১৫ লক্ষ ৮৮ হাজার ৭৭৫ জন মহিলা লক্ষ্মীর ভান্ডারের সুবিধা পেয়েছেন। যা দিতে রাজ্য সরকারের ১৩,৫২৩.৮৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের চালু করা জনদরদী প্রকল্পগুলির তালিকায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar)। চলতি বছরই এই প্রকল্পে টাকা বড়িয়েছে রাজ্য সরকার। ২০২৬ সালে বিধানসভা ভোট রয়েছে এ রাজ্যে। তার আগে এই প্রকল্পে ফের টাকা বাড়তে পারে বলে চর্চা চলছে। মনে করা হচ্ছে সেই সময় ২০০০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে। যদিও এখনও এই নিয়ে সরকার তরফে কোনো ঘোষণা হয়নি। তবে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।