ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে নতুন গাইডলাইন জারি করল এইমস, দেখুন কি করবেন, কি করবেন না

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কথায় আছে একা রামে রক্ষা নেই সুগ্রীব দোসর, আর সেটাই এবার সত্যি হয়ে উঠেছে অন্যভাবে। একা করোনার ভয় নয়, তার সঙ্গে সমানভাবে মহামারী হয়ে উঠতে চলেছে মিউকর মাইকোসিস বা কৃষ্ণ ছত্রাকও। করোনা থেকে বাঁচলেও শরীরে অতিরিক্ত স্টেরয়েড নেওয়ায় অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কৃষ্ণ ছত্রাকের আক্রমণে। মহারাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের আক্রমণে মৃত্যুর মুখে ঠেলে বলেছেন প্রায় ৯০ জন মানুষ। রাজস্থানেরও প্রায় একশোজনের শরীরে মিলেছে এই ছত্রাকের সংক্রমণ। দিন দিন যেভাবে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে এই ছত্রাক। তাতে ইতিমধ্যেই তাকে মহামারী ঘোষণা করেছে রাজস্থান। শুধু তাই নয় তৈরি করা হয়েছে অন্য ওয়ার্ডও। কোভিডের থেকেও এই ভাইরাস অনেক বেশি সংক্রামক এবং মৃত্যুর হারও অনেক বেশি। ইতিমধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী আইনের নিরিখে বিশেষ রোগ বলে ঘোষণা করেছে তেলেঙ্গানা সরকার। শুধু তাই নয় পশ্চিমবঙ্গেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে বেশ কয়েকজন রোগীর শরীরে।

এমতাবস্থায়, কৃষ্ণ ছত্রাক নিয়ে নতুন গাইডলাইন জারি করল এইমস হাসপাতাল।

সংক্রমণের লক্ষণঃ

সাধারণত রোগীদের ক্ষেত্রে চোখে লাল ভাব, চোখের চারপাশের অংশ ফুলে যাওয়া, ডাবল ভিশণের সমস্যা, চোখ খুলতে অসুবিধা হওয়া, মাথাব্যথা, চোখে ব্যথা হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে কালো তরল বের হওয়া অথবা রক্ত পড়া, মুখের অসারতা, দাঁত উঠে আসা ইত্যাদি লক্ষণও রয়েছে। তবে এধরনের লক্ষণ থাকলেও একেবারেই প্যানিক করবেন না। সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালো হয়ে যায় এই রোগ।

কাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশিঃ

এইমস জানিয়েছে, ক্যান্সার রোগী, উচ্চমাত্রায় ডায়াবেটিস রয়েছে এমন রোগী, কেটোসিডোসিসের জন্য অতিমাত্রায়  স্টেরয়েড, টসিলিজুমাব নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। এছাড়া কোভিড আক্রান্ত রোগী যারা দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন অথবা বাইরে থেকে অক্সিজেনের সাহায্য নিচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রেও মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে এই কৃষ্ণ ছত্রাক।

কি করবেন কি করবেন নাঃ

মুখের চারপাশে ফোলা ভাব রয়েছে কিনা লক্ষ্য রাখুন। এছাড়া মাড়ি থেকে রক্ত পড়া কিংবা দাঁত আলগা হয়ে আসছে কিনা সে বিষয়ে লক্ষ্য দিন। কালো কালো ছোপ, বর্ণহীনতা বা দৃষ্টিতে সমস্যা হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন। এই লক্ষণগুলি থাকলে দ্রুত ইএনটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বারবার বাড়িতে সুগার স্তর পরীক্ষা করুন। সম্প্রতি কোভিড থেকে মুক্তি পেলে খেয়াল রাখুন ব্লাড সুগার এবং প্রেসার সঠিক আছে কিনা। যাদের ক্ষেত্রে কোমরবিডিটি রয়েছে, তারা কোন রকম ওষুধই বাদ দেবেন না। পূর্বের সমস্ত রোগের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। নিজের থেকে কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ত্বকে ব্যবহার করবেন না বা সেবন করবেন না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মাথায় রাখবেন, এই রোগ নতুন কোনো রোগ নয়। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি।


Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর