৩৮ বছর আগে আদালতে ডিভোর্সের আবেদন করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার, সন্তানদের বিয়ের পর এল রায়

বাংলা হান্ট ডেস্ক : সোশ্যাল মিডিয়ার রমরমায় রোজই হাজার একটা অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হই আমরা। এই যেমন সম্প্রতি এমন এক অবাক করা ঘটনা সামনে এসেছে যা দেখে চমকে গেছে গোটা নেট দুনিয়া। বিবাহবিচ্ছেদের (Divorce) জন্য দীর্ঘ ৩৮ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে এই দম্পতিকে। জানা যাচ্ছে, ১৯৮৫ সালে স্বামী আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন (Divorce Application) করেন। আর এখন সেই রায় ঘোষণা করেছে আদালত।

জানা যাচ্ছে অবশেষে আদালত এই দম্পতিকে বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দিয়েছে। তাও আবার ৩৮ বছর পর। এই মামলা এতটাই লম্বা চলেছে যে, তার মাঝে ঐ ব্যক্তির সন্তানদেরও বিয়ে হয়ে গেছে। জানা যাচ্ছে এই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা শুরু হয় ভোপাল আদালত থেকে। এরপর সেই মামলা পৌঁছায় বিদিশা ফ্যামিলি কোর্টে। সেখান থেকে যায় গোয়ালিয়রের ফ্যামিলি কোর্ট, তারপর হাইকোর্ট এবং তারপর মামলা পৌঁছে যায় সুপ্রিম কোর্টে।

সূত্রের খবর, এই রিটায়ার্ড ইঞ্জিনিয়ার মূলত ভোপালের বাসিন্দা। এদিকে তার স্ত্রী গোয়ালিয়রের বাসিন্দা। এই ইঞ্জিনিয়ার দীর্ঘ ৩৮ বছর পর তার প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে কোর্ট। উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে ঐ ইঞ্জিনিয়ার তার প্রথম স্ত্রীকে বিয়ে করেছিলেন। তবে তার স্ত্রীর সন্তান না হওয়ায় ১৯৮৫ সালে বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে তার দাবি প্রত্যাখান করে কোর্ট। এদিকে তার স্ত্রীও গোয়ালিয়র কোর্টে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্য আবেদন করেন।

স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের বিরুদ্ধে আপিলের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি আদালতে ঘুরতে থাকে। প্রথমে স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করলে প্রথম স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন, যা আদালতে গৃহীত হয়। ২০০০ সালের এপ্রিলে, বিদিশায় স্বামীর মুলতুবি বিবাহবিচ্ছেদের মামলাটি আদালত খারিজ করে দেয়। এরপর স্বামী হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০০৬ সালে স্বামীর আপিল খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি দায়ের করেন স্বামী। স্বামীর এসএলপিও ২০০৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়। ২০০৮ সালে স্বামী আবার ডিভোর্সের আবেদন করেন। জুলাই ২০১৫ সালে, বিদিশা আদালত স্বামীর আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর হাইকোর্টের গোয়ালিয়র বেঞ্চে আপিল করেন তিনি। অবশেষে ৩৮ বছর অপেক্ষার পর হাইকোর্ট থেকে ডিভোর্স হয় দুজনের।

ছেলেমেয়েদেরও বিয়ে হয়েছে : স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমস্যার কারণে দুজনেই আলাদা থাকতেন। ১৯৯০ সালে, স্বামী পুনরায় বিয়ে করেছিলেন। এই অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের দ্বিতীয় স্ত্রীর থেকে দুটি সন্তান রয়েছে, তারাও বিবাহিত। দীর্ঘ ৩৮ বছর আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে বিবাহ বিচ্ছেদে রাজি হয়েছেন স্বামী ও প্রথম স্ত্রী। স্ত্রীকে বারো লাখ টাকা এককভাবে দিতে স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

alimony divorce 1

আসলে ওই মহিলার বাবা ছিলেন পুলিশ অফিসার। তিনি চেয়েছিলেন মেয়ের সংসার যেন ভেঙে না যায়। সেই কারণেই বিবাহবিচ্ছেদ বন্ধের জন্য বারবার আদালতে আবেদন জানাচ্ছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু ওই নারীর ভাইদের বোঝানোর পর স্বামী-স্ত্রী সম্মতিক্রমে ডিভোর্স দিতে রাজি হন। অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারকে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিবর্তে স্ত্রীকে ১২ লাখ টাকা ভরণপোষণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর