জুলুমের অভিযোগে হলদিয়া রিফাইনারিতে বন্ধ হল বিটুমিন ড্রাম ফিলিং ইউনিট! ঘনাচ্ছে আশঙ্কার মেঘ

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপর থেকেই বাংলা বিভিন্ন প্রান্তে তৈরি হয়েছে অশান্তি। বিশেষত এমন কিছু জায়গায় কর্তৃত্ব পেয়েছে বিজেপি, যা যথেষ্ট সমস্যা সৃষ্টি করেছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। অনেকের মতে এরই একটি উদাহরণ দেখা গেল, হলদিয়া রিফাইনারিতে। ঘটনাটি হল শনিবার হঠাৎই ইন্ডিয়ান অয়েলের হলদিয়া রিফাইনারির বিটুমিন ড্রাম ফিলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। রিফাইনারি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বেশকিছু বহিরাগত চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের ওপর জুলুম চালাচ্ছে। তাদের রিফাইনারিতে কাজ করতে দিচ্ছে না। ভোটের ফলাফল প্রকাশের দিন পাঁচেকের মধ্যেই অভিযোগ উঠেছিল, গেটেই পাস কেড়ে নেওয়া হচ্ছে ঠিকা শ্রমিকদের। যার ফলে কাজ করতে পারছেন না তারা। এদিনও বহিরাগতদের এই জুলুমের জেরে বন্ধ করে দিতে হলো বিটুমিন ড্রাম ফিলিং ইউনিট।

কর্তৃপক্ষের দাবি, এর পিছনে সরাসরি হাত রয়েছে একটি শ্রমিক সংগঠনের। যাদের সঙ্গে কয়েকদিন আগে বৈঠক করেছিলেন তারা। কিন্তু অশান্তি বন্ধ হবার আশ্বাস দিলেও আদতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কর্তৃপক্ষের মতে, ইন্ডিয়ান অয়েলের হলদিয়া রিফাইনারিতে প্রায় সাড়ে চোদ্দশ অস্থায়ী কর্মী এবং চার হাজার অস্থায়ী কর্মী কাজ করেন। তাই অস্থায়ী কর্মীদের উপর অনেকখানি নির্ভর করে সংস্থা। এ অবস্থায় পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকলে, শুধু বিটুমিন ড্রাম ফিলিং ইউনিট নয়, সমস্যা হতে পারে অন্যান্য উৎপাদনের ক্ষেত্রেও। এছাড়া সংস্থার নিরাপত্তার আশঙ্কাও রয়েছে।

ইতিমধ্যে এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে হলদিয়ার জেলাশাসককে। এছাড়া সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকেও চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দিব্যেন্দু শুধু সংসদই নন, হলদিয়া পেট্রোলিয়াম সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং হলদিয়া রিফাইনারি কন্ট্রাক্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতিও বটে। সেই কারণেই তাকেও চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে নিজেদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে হলদিয়া রিফাইনারি কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, এভাবে জুলুম চলতে থাকলে রিফাইনারিও কোনদিন বন্ধ রাখতে হতে পারে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই রিফাইনারি থেকে শুধু জ্বালানি তেল বা এলপিজি গ্যাস নয় অভিয়েশন ফুয়েলও সরবরাহ হয়। তাই বিমান চলাচলের ওপরেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলেই মত বিশ্লেষকদের। এমতাবস্থায়, অনেকেই বলছেন আগে এই সমস্ত বিষয়ে একচ্ছত্র অধিকার ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। হলদিয়ার ভোটে বিজেপি জিতলেও রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল। আর সেই কারণেই অনেক ক্ষেত্রে এ ধরনের সংস্থাগুলিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনো স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এখন আগামী দিনে প্রশাসনে বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয় তার ওপরেই নির্ভর করে থাকবে অস্থায়ী কর্মীদের ভবিষ্যৎ।

X