হাঁসখালি কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে আরো তিন! খুনের হুমকি, দেহ পোড়ানো সহ একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের

হাঁসখালি নাবালিকা ধর্ষণ ও মৃত্যু কাণ্ড নিয়ে রহস্য দিনের পর দিন আরো ঘনীভূত হয়ে চলেছে। ঘটনাটি সামনে আসার পর পুলিশ প্রশাসনের গাফিলতি, মুখ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য এবং পরে উচ্চ আদালতের দ্বারা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে প্রতিটি পদে পদে বিতর্ক ডানা বাধে। সিবিআই তদন্ত ভার হাতে নেওয়ার পর থেকেই উঠে আসতে থাকে একের পর এক নতুন তথ্য। আর এবার এই কাণ্ডে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এই নিয়ে মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

হাঁসখালি ধর্ষণ কাণ্ডে পুলিশ প্রথমে তৃণমূল নেতার ছেলে ব্রজ গোপাল গয়ালিকে গ্রেফতার করে। এরপর তার এক সহযোগী প্রভাকরকেও জেল হেফাজতে নেওয়া হয়। পরবর্তীকালে হাইকোর্ট দ্বারা তদন্ত ভার সিবিআই এর হাতে তুলে দেওয়ার পর তৃতীয় অভিযুক্ত হিসেবে রঞ্জিত মল্লিক নামক এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এদিন ব্রজ গোপালের আরো তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।

এই তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নির্যাতিতা নাবালিকাটিকে পোড়ানোর সময় শ্মশানে উপস্থিত থাকার অভিযোগ মিলেছে। এছাড়াও এই তিন যুবক নির্যাতিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে আটকানোর জন্য তার পরিবারকে ভয় দেখান এবং খুনের হুমকি পর্যন্ত দেন। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার পরিবারকে খুনের হুমকি দেওয়া, ধর্ষণ কাণ্ডে তথ্য প্রমাণ গায়েব করা এবং শ্মশানে বল পূর্বক দেহ পোড়ানো সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এই সকল অভিযোগের ভিত্তিতে বর্তমানে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

হাইকোর্টের নির্দেশের পর থেকেই তৎপর দেখা যায় সিবিআইকে। কখনো নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করা তো কখনো আবার শ্মশান থেকে অভিযুক্তের বাড়ি; তদন্তকে কিনারায় পৌঁছে নিয়ে যাওয়ার জন্য সর্বত্র তাদের চেষ্টা জারি রয়েছে।এরই মাঝে, অভিযুক্ত যুবকের বাড়ির পেছনের দিক থেকে একটি ফোনও উদ্ধার করেতারা। এছাড়াও তার বাড়ির মেঝেতে রক্তের চিহ্ন আবিষ্কার করে সিবিআই অফিসারদের একটি দল। এরপর তদন্তে ফরেনসিক অফিসারদের সাহায্য নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, তদন্ত-এর শুরু থেকেই নাবালিকার দেহ পোড়ানো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ধর্ষিতার বাবা প্রথমে ভিন্ন কথা বললেও পরবর্তীকালে তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে জানান যে, অভিযুক্তরা জোর করে তার মেয়ের দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ফলে এরপরেই সিবিআই অফিসাররা শ্মশান কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করে। আর এবার জোর করে দেহ পোড়ানো সহ একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেফতার করলো তারা।


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর