বাংলা হান্ট ডেস্ক: চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করার সিধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। আর তাতেই হল বাজিমাত! এখন প্রতি মাসে হয় ৮ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন! খুব কম বয়সেই রাহুলের এই সাফল্য রীতিমতো চমকে দিয়েছে সকলকেই!
রাহুল রাজ, বিহারের পাটনায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর খড়্গপুর আইআইটি থেকে ইন্টিগ্রেটেড মাস্টার অফ সায়েন্সে পড়াশোনা শেষ করেন। তারপরেই প্লেসমেন্টের সুবাদে ভালো চাকরি পেয়ে যান তিনি। কিন্তু, চাকরি পেলেও ছিলনা আগ্রহ। তাই, চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন রাহুল।
রাহুল তাঁর ৬ বছরের কেরিয়ারে মোট ৩ টি স্টার্টআপে কাজ করেছিলেন। তার মধ্যে প্রথম কোম্পানিটি ছিল Zaika। যেখানে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে রেস্তোরাঁর জন্য দেশীয় খাদ্য এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্ভাবনী পরামর্শ দিতে হত তাঁকে।
তারপর তিনি একে একে কাজ করেছেন Inshorts এবং Bizongo-র সাথে। দুই জায়গায় চাকরি শেষ করার পর তিনি CoinEx-এ কাজ শুরু করেন। এখান থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয়-বিক্রয়ের কাজ হতো। সেই সময়ে এখানে দৈনিক প্রায় ১৭০০ কোটি টাকারও বেশি ট্রেড হতো। কিন্তু, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কারণে এটি বন্ধ হয়ে যায়।
যদিও, এর পরে আর পিছনে ফিরে তাকাননি রাহুল। তিনি তাঁর বেঙ্গালুরুর দলকে নিয়ে সেখানে Flobiz শুরু করেন। এটি আদতে একটি সফটওয়্যার কোম্পানি। Flobiz শুরু করার পর রাহুল এর প্রতিষ্ঠাতার পাশাপাশি প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে এখানে কাজ শুরু করেন। মূলত এটি একটি মোবাইল ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম যা ছোট ব্যবসার প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে।
এটি দেশের প্রথম বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠে যা ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে সহায়তা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ২০১৯ সালে, রাহুল যখন এটি শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গী ছিলেন আদিত্য নায়েক এবং রাকেশ যাদব নামে দুই বন্ধু।
Flobiz-এর এক্কেবারে শুরুর দিকে বিভিন্ন সংস্থা তাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করে। যাদের মধ্যে অন্যতম ছিল Sequoia Capital India, Think Investments, Elevation Capital এবং Binex। পাশাপাশি, Paytm-এর বিজয় শেখর শর্মা, জুপিটারের জিতেন গুপ্ত, পাইন ল্যাবসের অমরীশ রাও, হ্যালো অ্যাপের নীরজ অরোরা এবং বেশ কয়েকটি কোম্পানির আধিকারিকরাও তহবিল সংগ্রহে অংশ নিয়েছিলেন।
বর্তমানে ভারতে এখনও প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ কাগজে কলমে কাজ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাহুল তাঁর সহকর্মীদের সাথে সাধারণ মানুষের কাজ সহজ করার লক্ষ্যে myBillBook শুরু করেন। অ্যাপটি চালু হওয়ার পর থেকে ৬০ লক্ষেরও বেশি মানুষ এটি ডাউনলোড করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই, অ্যাপটি যে বিরাট জনপ্রিয়তা পেয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। এখানে প্রায় ১২ লক্ষ্য সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন এবং প্রতি মাসে ৮ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়। কোম্পানিটিতে মোট ১২০ জন কর্মচারীও রয়েছেন।