বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করে অধিকাংশ যুবক-যুবতীই চান দারুণ একটি চাকরি পেয়ে তারপর নিশ্চিন্তে জীবন কাটাতে। যদিও, বর্তমানে এই পরিবর্তনের যুগে দাঁড়িয়ে অনেকেই বিভিন্ন বিকল্প রাস্তায় হেঁটে সেখানে সাফল্য লাভ করে কার্যত পেশা বানিয়ে নেন সেই উপায়গুলিকে। আর যার ফলে তাঁদেরকে দেখে অনুপ্রাণিত হন বাকিরাও। বর্তমান প্রতিবেদনেও আমরা ঠিক সেইরকমই একজন ব্যক্তির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যিনি প্রথাগত ভাবে না হেঁটেও তৈরি করেছেন এক অনবদ্য উত্তরণের কাহিনি।
মূলত, আমরা যাঁকে নিয়ে আলোচনা করছি তাঁর নাম হল সন্দীপ কুমার ভার্মা। উচ্চশিক্ষিত হয়ে চাকরির সুযোগ পেয়েও তিনি সেদিকে না গিয়ে নিজের পছন্দের কাজ করেই আজ হয়েছেন সফল। জানা গিয়েছে, সন্দীপ উত্তরপ্রদেশের বারাবাঙ্কি তহসিলের রামনগরের গগিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমান সময়ে গোটা জেলায় তিনি হাইটেক কৃষক হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। পড়াশোনায় অত্যন্ত তুখোড় সন্দীপ বি.টেক করার পর কয়েকদিন বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করলেও মন থেকে তিনি অন্য কিছু করতে চাইছিলেন। আর ঠিক তারপরেই তিনি নিয়ে ফেলেন সাহসী সিদ্ধান্ত।
এখন করছেন বাম্পার উপার্জন :
তিনি গ্রামে ফিরে এসে সেখানে কৃষিকাজ (Farming) শুরু করেন। বর্তমানে সন্দীপ উত্তরপ্রদেশ সরকারের উদ্যান বিভাগ থেকে হর্টিকালচার মিশনের অধীনে প্রাপ্ত অনুদানে পলি হাউস লাগিয়ে Gerbera ফুলের চাষ করছেন। পাশাপাশি, এই চাষ করেই তিনি এত বেশি মুনাফা অর্জন করছেন যে, অনেকেই বড় বড় চাকরির মাধ্যমেও তা পারেননা। তিনি এখন প্রায় এই ফুলের চাষ করে বার্ষিক ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা রোজগার করেন।
পরিবারের সদস্যরা ক্ষুব্ধ হন :
এই প্রসঙ্গে সন্দীপ কুমার ভার্মা জানান যে, “পড়াশোনার পর অনেক কোম্পানিতে চাকরি করেছি কিন্তু চাকরিটা পছন্দ হয়নি। এমতাবস্থায়, আমি বাড়ি ফিরে কৃষিকাজ করার মনস্থির করি। শুরুতে আমাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। পরিবারের সদস্যরাও শুরুতে বিশ্বাস করেননি। এত টাকা খরচ করে ছেলেকে পড়ানোর পর সে গ্রামে কৃষিকাজ করছে বলে তাঁরা দুঃখও পান। অনেকেই ভেবেছিলেন তাঁদের ছেলে পাগল হয়ে গেছে এবং সব টাকা ডুবিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমি কঠোর পরিশ্রমে সবার মুখ বন্ধ করে দিয়েছি। আস্তে আস্তে সব ঠিক হতে লাগল।”
সন্দীপের মতে, Gerbera ফুলের চাষ থেকে তিনি এবং তাঁর পরিবার বছরে ৭৫ লক্ষ টাকা আয় করেন। এর থেকে খরচ বাদ দিলে সরাসরি প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা (Indian Rupees) লাভ থাকে। তিনি এখন ৮টি পলি হাউসে এই ফুলের চাষ করছেন বলেও জানা গিয়েছে।