বাংলাহান্ট ডেস্ক : সকালে ঘুম থেকে উঠেই কোন রকমে রেডি হয়ে অফিস। আবার অফিস থেকে ফিরে এসে পরিবারকে একটু সময় দিতে না দিতেই চোখে নেমে আসে ঘুম। দিনের পর দিন এভাবেই পেরিয়ে যাচ্ছে বহু মানুষের। আসলে প্রায় সকলেই বেঁচে থাকার জন্য শুধুমাত্র নিজের এবং পরিবারের কথাটাই চিন্তা করছেন। তবে এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এবার হদিস পাওয়া গেল বাস্তবের সোনু সুদের (Sonu Sood)। দুঃস্থ শিশুদের শিক্ষা দিতে নিজের লাখ টাকার চাকরি ছেড়ে রাস্তায় নেমে এলেন হারিয়ম জিন্দাল (Hariom Jindal)।
লুধিয়ানার বাসিন্দা হারিয়ম জিন্দাল। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। তবে তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্যই হলো দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করা। বছরের পর বছর ধরে সেই কাজই করে আসছেন তিনি। আসলে দেশের সম্পদ শিশুরাই। আর্থিক সমস্যার জেরে স্কুলে যেতে পারেনা দরিদ্র পরিবারের শিশুরা। তবে তাদের মেধা যাতে কোনভাবেই নষ্ট হয় না যায় সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন হারিয়ম।
১৯৬৬ সালের ৯ জুন লুধিয়ানার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন হারিয়ম জিন্দাল। তার বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। প্রথমে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও হঠাৎ করেই ব্যবসায় নেমে আসে মন্দা। ফলে কোনক্রমে গ্রামের স্কুল থেকেই মাধ্যমিক পাস করেন হারিয়ম। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি পাড়ি দেন চণ্ডীগড়ে। চণ্ডীগড়ের একটি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন তিনি।
একটা সময় পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য ছোটখাট ব্যবসা শুরু করেন হারিয়ম। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক শিপিং এর ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তবে ৪৪ বছর বয়সে এসে তিনি সিদ্ধান্ত নেন আইন নিয়ে পড়াশোনা করার। আসলে দুঃস্থ পরিবারের শিশুদের শিক্ষা দিতে এবং তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতেই এই পথ বেছে নেন তিনি।
শুনলে অবাক হবেন, শিশুদের কথা চিন্তা করেই পড়াশোনা শেখানোর জন্য এক অন্য পথ বেছে নিয়েছেন হারিয়ম। তৈরি করেছেন বিশেষ বই। সেই বইয়ের দ্বারা শিশুদের A for Apple শেখানো হয় না বরং A for Administration শেখানো হয়। শিশুদের জন্য তিনি খুলেছেন একটি কম্পিউটার স্কুল। তাঁর এহেন কাজে খুশি লুধিয়ানাবাসী।