মুখ পুড়ল রাজ্যের! ১ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে কৌস্তভকে জামিন দিল আদালত

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দিনভর টানাপোড়েনের পর জামিন (Bail) পেলেন কংগ্রেস নেতা তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী (Kaustav Bagchi)। শনিবার সকালেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি, আর এদিনই তাকে জামিন দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। নেতার গ্রেফতারির পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য-রাজনীতি। এদিন কৌস্তভের শুনানিকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে শুনানিকক্ষেও। আদালতের বাইরেও বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা।

শনিবার বিকেলেই রায়দানের পর অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট জানান ১০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে কৌস্তভ বাগচীকে।। কৌস্তভের হয়ে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মক্কেল কি সন্ত্রাসবাদী? পুলিশকে এত সাহস কে দিল? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে রাতে কারও বাড়িতে যেন না হানা দেওয়া হয়।’

পাশাপাশি তার সংযোজন, ‘দিন এমন আসছে, সরকারি কর্মচারী গ্রেফতার, নওশাদ গ্রেফতার, এবার আইনজীবী গ্রেফতার। যিনি অভিযোগ করেছেন, তার লেখা দেখুন। রাত ৩টের সময় কী করে পুলিশ যায়?’ কৌস্তভের বিরুদ্ধে যেসব ধারা দেওয়া হয়েছে, অধিকাংশই জামিনযোগ্য। প্রসঙ্গত, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৬, ৫০৯, ৩৫৪A এবং ১২০৪ ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছিল কৌস্তভ বাগচীকে।

এরপর কৌস্তভের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, ‘৪১ এ নোটিশ নেই, তারপর রাতে গিয়ে কীভাবে গ্রেফতার? আগামিদিনে তো বিচারপতির বিরুদ্ধে পুলিশ এমন করতে পারে’, বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট বলছে, মাঝরাতে কারও বাড়ি যেতে না, তারপরও কীভাবে এত রাতে কৌস্তভের বাড়িতে পুলিশ গেল? ঘুমনো একজন মানুষের ফান্ডামেন্টাল রাইট।’

কৌস্তভের আইনজীবী আরও বলেন, “আমার মক্কেল একটি বইয়ের কথা উল্লেখ করেছেন যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর অতীতের কথা বলা আছে। সেই বই এখনও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সেই বই সরকার নিষিদ্ধ করেনি। কেন ৪১ ধারায় নোটিশ না করে মাঝরাতে হাজির হল পুলিশ? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কেন গভীর রাতে পুলিশ বাড়িতে ঢুকল। এর পর কোনও বিচারক মুখ্যমন্ত্রী বা সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কথা বললে তার বাড়িতেও পুলিশ ঢুকে যাবে।’

kaustav bagchi

কৌস্তভের জামিনের আবেদন করে আইনজীবী বলেন, ‘আমরা আইনজীবীরা আতঙ্কিত। গণতান্ত্রিক দেশে আইনজীবীর বাড়িতে রাতে পুলিশ গিয়ে হামলা করছে। এটা কি সন্ত্রাসবাদীর ঘর?’ অন্যদিকে, সরকারের আইনজীবী রাজ্যের হয়ে কৌস্তভের জামিনের বিরুদ্ধে কথা বলেন। এরপর দু’পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল-জবাব শেষে অর্ডার রিজার্ভ রাখার কথা বলেন বিচারক।

কিন্তু বিচারকের মন্তব্যের পরই শোরগোল পরে যায় আদালতে। কোনও অর্ডার রিজার্ভ না রেখে ব্যক্তিগত বন্ডে কৌস্তভকে জামিন দিতে হবে, দাবি তোলেন আইনজীবীরা। এরপর একসময় হট্টগোলের জেরে বিচারক নিজের আসন ছেড়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। আইনজীবীরা এরপরও নিজেদের দাবিতেই অনড় থাকে। পরে কৌস্তভের জামিনের নির্দেশ দেন বিচারক। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ এপ্রিল।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর