বাংলা হান্ট ডেস্ক : আবারও সংবাদের শিরোনামে উঠে এলেন হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren)। প্রত্যন্ত আদিবাসী এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্দেশে বিতর্কিত উপদেশ দিলেন ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) মুখ্যমন্ত্রী। গত শুক্রবার রামগড় জেলায় এক জনসভা থেকে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় হেমন্ত বলেন, ‘আপনারা ব্যাঙ্কে টাকা রাখবেন না। প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে টাকা মাটিতে পুঁতে ফেলুন।’ রামগড় বিধানসভা আসনে আর কিছু দিন পরই অনুষ্ঠিত হবে উপনির্বাচন। এই নির্বাচনে সোরেনের দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রার্থী বজরং মাহতো। উপনির্বাচনের প্রচারের জন্যই এদিন রামগড়ে গিয়েছিলেন হেমন্ত সোরেন।
ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার প্রার্থী বজরং মাহতোর প্রচারে গিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেন সোরেন। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি ঘেটেছে এই নরেন্দ্র মোদির আমলেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। আমরা জানি না যে হঠাৎ করে কোন ব্যাঙ্ক কখন ডুবে যাবে। তাই ব্যাঙ্কে টাকা রাখা নিরাপদ নয়।’ এই মন্তব্যের পরই ফুঁসে উঠেছে বিজেপি। একটি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হয়ে কিভাবে এই মন্তব্য করতে পারেন তা নিয়েই তোপ দেগেছে গেরুয়া শিবির।
কী এমন বলেন হেমন্ত সোরেন? ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমি গ্রামাঞ্চলের কৃষক ও শ্রমিকদের বলে এসেছি যে আপনার টাকা ব্যাঙ্কে জমা রাখবেন না। কারণ ব্যাঙ্কগুলি ক্রমাগত লোকসানে চলেছে। বরং প্লাস্টিকে টাকা ভরে মাটিতে পুঁতে দিন, কিন্তু ব্যাঙ্কে কোনও দিন টাকা রাখবেন না। ব্যাঙ্কাররা কখন আপনার টাকা নিয়ে পালাবে তা আপনি জানতেও পারবেন না। আগেকার দিনেও মানুষরা এই মাটিতে টাকা পুঁতে রাখতেন। অন্তত তারা যে পরিমাণ টাকা রাখতেন, সেই টাকা তাঁদেরই থাকত। বর্তমানে দেশের যা অবস্থা, আপনি যদি আজকে যতটুকু জমা করে রেখেছেন, ততটুকুই যদি পান তবে তাই যথেষ্ট হবে।’
এমন মন্তব্যের পরই বিজেপি নেতা তথা ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস বলেন, ‘হেমন্ত সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদের নির্বিচারে লুটপাট চলছে। বেআইনিভাবে বালি ও কয়লা উত্তোলন চলছে। স্পষ্টতই যখন কালো টাকা আসবে, তখন তা মাটির নীচেই তো লুকিয়ে রাখতে হবে। তিনি দুর্নীতিবাজদের মধ্যে প্রধান। তাই এমন বক্তব্যই দিচ্ছেন। একজন মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে এহেন মন্তব্য চূড়ান্ত অসাংবিধানিক।’
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে চাঁইবাসার জনসভা থেকে অমিত শাহ তোপ দেগেছিলেন হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের (tribal community) একজন প্রতিনিধি। কিন্তু, এই সরকার আদিবাসী বিরোধী। তাদের শাসনকালে দুর্নীতি চরম শিখরে উঠেছে। এই সময়টা হল মধ্যসত্ত্বভোগী ও আদিবাসীদের জমি দখলকারীদের সময়। এখন এখানে যুবক-যুবতীরা চাকরির নামে প্রতারিত হয়। পড়াশোনার নামে ধোঁকাবাজির শিকার হয় শিশুরা। আর উন্নয়নমূলক প্রকল্পের নামে ঠকানো হয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষকে।’