বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক সময়ে অসমে (Assam) একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপ সংঘটিত করার জন্য বহু সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার ইমাম এবং মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই এ সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের উদ্বেগ ক্রমশ বেড়ে চলেছে আর এবার জঙ্গি কার্যকলাপ বন্ধের স্বার্থে নয়া পরিকল্পনা নিতে চলল অসম সরকার। এবার থেকে সে রাজ্যে ইমাম এবং মাদ্রাসা শিক্ষকদের ‘অনলাইন রেজিস্ট্রেশন’ করার পাশাপাশি পুলিশ দ্বারা যাচাই হবে বলেও জানা গিয়েছে। গতকাল এ প্রসঙ্গে ঘোষণা করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himant Biswa Sarma)।
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিনে প্রায় ৩০ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশের ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ নামক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। অসমের বুকে জেহাদি কার্যকলাপ চালানোর পাশাপাশি তাদের অন্যান্য একাধিক পরিকল্পনা ছিল বলে জানা গিয়েছে আর এবার সেই সূত্রেই এবার নয়া পরিকল্পনা নিতে চলেছে সরকার।
এ প্রসঙ্গে গতকাল হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “একাধিক ক্ষেত্রে ইমাম এবং মাদ্রাসার শিক্ষকদের জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এক্ষেত্রে গ্রামের লোকজনদের আমি অনুরোধ করতে চাই, যদি আপনারা কোন অপরিচিত ইমামদের দেখতে পান, তবে তৎক্ষণাৎ পুলিশকে জানান। যেভাবে রাজ্যে জঙ্গিদের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা বেড়ে চলেছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। সেই কারণে সরকারের তরফ থেকে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রটোকল’ শুরু করা হয়েছে। অন্যান্য রাজ্য থেকে যারা অসমে ইমাম এবং মাদ্রাসা শিক্ষক হিসেবে কাজ করতে আসবেন, তাদের সকলকেই অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।”
উল্লেখ্য, গত শনিবার অসমের গোয়ালপাড়া এলাকায় শুভান এবং জালালুদ্দিন নামে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা দুজনে যথাক্রমে গোয়ালপাড়ার শান্তিপুর মসজিদ এবং টিলাপাড়া নতুন মসজিদের ইমাম। ইতিমধ্যেই তাদেরকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিশ সূত্রে খবর, তারা সকলেই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এবং রাজ্যে জেহাদি কর্মকাণ্ড এবং অন্যান্য একাধিক পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিল। অতীতেও একাধিক ইমামদের সন্দেহভাজন জঙ্গি অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে গতকাল হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “সম্প্রতি গোয়ালপাড়া থেকে দুইজন ইমামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই কারণেই আমরা নতুন একটি পরিকল্পনা নিতে চলেছি। এক্ষেত্রে অন্য রাজ্য থেকে যদি কোন ইমাম কাজ করতে আসে, তবে তাদের সম্পর্কে পুলিশে জানাতে হবে। প্রশাসন এই সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজ নেবে।” এছাড়াও ইমাম এবং মাদ্রাসা শিক্ষকদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করানোর বিষয়ে নির্দেশ দেন অসম মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের এই নয়া পরিকল্পনার মাধ্যমে রাজ্যে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।