বাংলাহান্ট ডেস্ক : অসমে সংখ্যালঘুদের নিয়ে বড় ঘোষণা করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (himanta biswa sarma)। তাঁর মতে কোনও রাজ্যে কোনও সম্প্রদায় সংখ্যালঘু কি না, তা রাজ্য বা জেলায় মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করেই দেখা উচিত। আসাম বিধানসভায় চলছে বাজে ট অধিবেশন। সেখানেই বুধবার হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘কোনও সম্প্রদায় সংখ্যালঘু কি না তা নির্ভর করে তার ধর্ম, সংস্কৃতি বা শিক্ষাগত অধিকারে হস্তক্ষেপের হুমকির উপর। যদি এমন কোনও হুমকি না থেকেই থাকে তাহলে সেই সম্প্রদায় সংখ্যালঘু বলে গণ্য হবে না।
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়ক মৃণাল সাইকিয়া। তাঁর প্রশ্নের জবাবে শর্মা জানান, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং সংবিধানের ২৫ থেকে ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদে দেওয়া সংজ্ঞা অনুযায়ী, যে কেউ সরাসরি বলতে পারে না যে মুসলিমরা, বৌদ্ধরা বা খ্রিস্টানরা সংখ্যালঘু। কারণ তারা একটি নির্দিষ্ট রাজ্যে সংখ্যালঘু। সামগ্রিক অর্থে তা সত্য না ও হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোনও সম্প্রদায় সংখ্যালঘু কি না তার সংজ্ঞা নির্দিষ্ট রাজ্য বা জেলার তৎকালীন পরিস্থিতি এবং বাস্তব অবস্থার উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। এই মুহুর্তে অসমের জন্য এটি উদ্বেগজনক বিষয়।’
অসমের বেশ কিছু এলাকায় হিন্দুদের সংখ্যালঘু হিসেবে ঘোষণা করার কথা আগেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি আরও বলেন, ‘বরাক উপত্যকায় বাঙলা ভাষাভাষীদের অসমের প্রেক্ষাপটে ভাষাগত সংখ্যালঘু বলা যাবে না। কিন্তু যারা অসমিয়া, রেংমা, নাগা এবং মণিপুরী ভাষায় কথা বলে ওই অঞ্চলে তারা ভাষাগত সংখ্যালঘু। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বেশ কিছু অংশে আবার বাংলাভাষী সংখ্যালঘুও রয়েছেন।
তাঁর মতে, ‘দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে একটি ধারণা ছিল যে মুসলিম মানেই সংখ্যালঘু। কিন্তু এবার এই সংজ্ঞাকেই পালটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে বলা হয়েছে যে পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে একটি নির্দিষ্ট রাজ্যে হিন্দুরাও সংখ্যালঘু হতে পারর। অসমের সালমারা জেলায় হিন্দুরাই সংখ্যালঘু, সেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ’
এখনও পর্যন্ত বিদ্যামান নির্দেশিকা অনুসারে, একমাত্র কেন্দ্রই কোনও সম্প্রদায় সংখ্যালঘু কি না সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অসমের নগাঁও, ধুবড়ির মতন একাধিক জেলাতেই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই প্রসঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘আমাদের সংবিধানে সংখ্যালঘুদের কোনো সংজ্ঞা ছিল না। সংখ্যালঘুদের জন্য জাতীয় কমিশন গঠনের পরেই শব্দটি সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। সেখানেও শুধুমাত্র ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিবেচনা করা হয়েছিল, ভাষাগত সংখ্যালঘুদের নয়। সংখ্যালঘু হিসাবে বিবেচিত ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলি হল মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, পার্সি এবং জৈন।’। এহেন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বর্তমানে অসমের বেশ কিছু এলাকায় হিন্দুদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে ঘোষণা করার জন্য কী রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট, এখন সেটাই দেখার।