আদানির পর ভারতে ফের বড় ধামাকার পূর্বাভাস দিল হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ, কে হবেন টার্গেট? শুরু তুমুল জল্পনা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ফের একবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এল হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ (Hindenburg Research)। গত বছরের শুরুতেই আমেরিকার এই শর্ট সেলিং কোম্পানি ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির প্রসঙ্গে এমন রিপোর্ট সামনে এনেছিল যেটির প্রভাব এখনও পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারেনি আদানি গ্রুপ। তবে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ভারতে ফের একটি ধামাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই কোম্পানি “এক্স”-এ একটি পোস্টে বলেছে যে ভারতে খুব শীঘ্রই বড় কিছু ঘটতে চলেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ গত বছরের ২৪ জানুয়ারি আদানি গ্রুপের ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ার বিক্রির ঠিক আগে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল।

বড় ধামাকার পূর্বাভাস দিল হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ (Hindenburg Research):

হিন্ডেনবার্গের (Hindenburg Research) ওই রিপোর্টে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে শেয়ারের দামে হেরফেরসহ নানা অভিযোগ তোলা হয়। এমতাবস্থায়, আদানি গ্রুপ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। কিন্তু এই রিপোর্টের কারণে গ্রুপের মার্কেট ক্যাপ ১৫০ বিলিয়ন ডলার কমে যায়। যার কারণে গৌতম আদানির সম্পদে ব্যাপক পতন ঘটে এবং তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় অনেকটা নিচে নেমে যান। যদিও, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে আদানি গ্রুপের শেয়ারগুলি তাদের ক্ষতি অনেকাংশে পুষিয়ে নিয়েছে।

   

এদিকে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ (Hindenburg Research) এখনও পর্যন্ত একাধিক কোম্পানির পর্দাফাঁস করেছে বলে দাবি করেছে। এই সংস্থাটি ২০১৭ সালে নাথান অ্যান্ডারসন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মূলত, এটি একটি ফরেনসিক ফিনান্সিয়াল রিসার্চ ফার্ম। যা ইক্যুইটি, ক্রেডিট এবং ডেরিভেটিভ বিশ্লেষণ করে। এই কোম্পানির নামকরণ করা হয়েছে হাই প্রোফাইল হিন্ডেনবার্গ এয়ারশিপ বিপর্যয়ের নামে। যেটি ১৯৩৭ সালের ৬ মে ঘটেছিল। এই দুর্ঘটনাটি ঘটে আমেরিকার নিউ জার্সির ম্যানচেস্টার টাউনশিপে। এমতাবস্থায়, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ বিভিন্ন কোম্পানিতে ঘটা অনিয়মগুলিকে শনাক্ত করে এবং সেই সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশ করে। সংস্থাটি দাবি করেছে যে, তারা মনুষ্যসৃষ্ট বিপর্যয়ের দিকে নজর রাখে। এর মধ্যে রয়েছে হিসেব সংক্রান্ত অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও গোপন লেনদেন। কোম্পানি তখন মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে ওই “টার্গেট” কোম্পানির বিরুদ্ধে বাজি ধরে।

আরও পড়ুন: RBI-র একটি সিদ্ধান্তেই ঘটল বিপদ! মুহূর্তের মধ্যে উধাও ২.৮২ লক্ষ কোটি টাকা, কপাল পুড়ল বিনিয়োগকারীদের

একাধিক কোম্পানি তোলপাড়: জানিয়ে রাখি, নাথান অ্যান্ডারসন ইউনিভার্সিটি অফ কানেকটিকাট থেকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসে ডিগ্রী অর্জনের পর একটি ডেটা কোম্পানি ফ্যাক্টসেট রিসার্চ সিস্টেমস ইনকর্পোরেটেড-এ কাজ করেছিলেন। সেখানে তাঁর কাজ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলির সাথে সম্পর্কিত ছিল। ২০২০ সালে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আমি অনুভব করেছি যে অগভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।” অ্যান্ডারসন ইজরায়েলে অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবেও কাজ করেছেন। অ্যান্ডারসন জানান, তিনি প্রচুর চাপের মধ্যে কাজ করতে উপভোগ করেন। এর পাশাপাশি তিনি হ্যারি মার্কোপোলোসকে তার আদর্শ হিসাবে বিবেচনা করেন। মার্কোপোলোস হলেন একজন বিশ্লেষক যিনি বার্নি ম্যাডফের ফ্রড স্কিম প্রকাশ করেছিলেন। হিন্ডেনবার্গ (Hindenburg Research) দাবি করেছে যে ২০১৭ সাল থেকে তারা অন্তত ৩৬ টি কোম্পানিতে অনিয়ম প্রকাশ করেছে।

আরও পড়ুন: চিনের হুঙ্কার এবার হবে বন্ধ! দুর্ধর্ষ পরিকল্পনা করছে আদানি গ্রুপ, মাথায় হাত জিনপিংয়ের

আদানির ওপর বাজি রেখে কত উপার্জন হয়েছে: হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ (Hindenburg Research) জানিয়েছে, তারা আদানি সিকিউরিটিজের শর্টিংয়ের মাধ্যমে তার ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে ৪.১ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। কিন্তু এই পরিমাণ অর্থ রিসার্চে ব্যয় করা অর্থের পরিমাণের সমান নয়। কোম্পানি বলেছে যে, “আমরা ইনভেস্টার রিলেশনশিপের মাধ্যমে আদানি শর্টস থেকে ৪.১ মিলিয়ন ডলারের রেভিনিউ আয় করেছি এবং কোম্পানিটি আদানির আমেরিকা বন্ড শর্ট করে ৩১,০০০ ডলার উপার্জন করেছে।” সংস্থাটি বলেছে যে, “এটি একটি খুব ছোট পজিশন ছিল। আইনি এবং রিসার্চ খরচ বাদ দিয়ে, আমরা আদানি শর্টে ব্রেক-ইভেন ছাড়িয়ে যেতে পারি।” হিন্ডেনবার্গ। এই মামলায় কোটাক ব্যাঙ্ককেও জড়িয়েছিল হিন্ডেনবার্গ। তারা বলেছিল যে, ওই ব্যাঙ্ক একটি বিদেশ ফান্ড ট্রান্সফার তৈরি করেছে। যেটি তার ইনভেস্টার পার্টনারকে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে বাজি ধরার জন্য ব্যবহার করেছিল।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর