বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশ ভারতবর্ষ সত্যিই বৈচিত্র্যে ভরপুর। একাধিক ধর্মের মানুষ এখানে বসবাস করেন যুগ যুগ ধরে। স্বাভাবিকভাবেই, তাঁদের একে-অপরের সাথে তৈরি হয় এক আত্মিক সম্পর্ক। জাত-পাত-ধর্ম-বর্ণ ভুলে সকলেই যেন মিলে মিশে থাকেন এই দেশে। তবে, সম্প্রতি কিছু ধর্মীয় উষ্কানীমূলক ঘটনা অবশ্যই প্রশ্ন তুলেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে। তবে, সেই বিতর্কের মাঝেই যেন আরও একবার সত্যি হয়ে গেল “বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান” এই আপ্তবাক্যটি।
সম্প্রতি বিহারে ঘটা এক নজিরবিহীন ঘটনা অন্তত মনে করিয়ে দিচ্ছে এই বিখ্যাত লাইনটিকেই। যখন হিন্দু-মুসলিম নিয়ে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব ক্রমশ চরমে উঠেছে দেশজুড়ে ঠিক তখনই অনবদ্য সৌভ্রাতৃত্বের অপরূপ ছবি সামনে এল বিহারে। আর তা ইতিমধ্যেই ভাইরালও হয়েছে নেটমাধ্যমে। যা দেখে সকলেই ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ছবিটির।
সম্প্রতি সারা দেশে রামনবমী পালিত হয়েছে মহাসমারোহে। সেই সংক্রান্ত ধর্মীয় মিছিলও বের করা হয় বিভিন্ন জায়গায়। এরই মধ্যে এক নজিরবিহীন ঘটনাও ঘটেছে বিহারে। বর্তমানে প্রকাশিত তথা ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা গিয়েছে যে, রামনবমী উপলক্ষ্যে বিহারের কাটিহার জেলার ফকরতাকিয়া চকে অবস্থিত জামে মসজিদের সামনে, কিছু হিন্দু যুবক গন্ডগোল এড়াতে এবং মসজিদের নিরাপত্তা বজায় রাখতে মানবশৃঙ্খল তৈরি করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
ওয়াইস সুলতান খান নামে একজন টুইটার ব্যবহারকারী এই ছবি টুইট করে লিখেছেন যে, “বিহারের কাটিহারে রামনবমীর মিছিলের সময়, কিছু হিন্দু যুবক মসজিদের সামনে একটি মানববন্ধন তৈরি করেছেন এবং এটি রক্ষা করেছেন। এই পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সৌভ্রাতৃত্ববোধ খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের মানবতাকে ফিরিয়ে আনার জন্য। এই ধারনাই আমি বিশ্বাস করি।”
এদিকে, এই ছবি ইতিমধ্যেই একাধিক নেটমাধ্যমে ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হচ্ছে। পাশাপাশি, এটি দেখে নিজেদের প্রতিক্রিয়াও জানাচ্ছেন নেটিজেনরা। এছাড়াও, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই হিন্দু যুবকদের কুর্ণিশও জানান সকলেই। পাশাপাশি, মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অপরূপ নিদর্শন চোখে পড়েছে। সেখানে রামনবমীর মিছিল চলাকালীন মিছিলটি যখন একটি মসজিদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল তখন ধর্মীয় ভাবাবেগে যাতে আঘাত না লাগে সেজন্য ডিজে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
A few Hindus making human chain for safeguarding a Jama Masjid in Bihar's Katihar during Ramnavmi Juloos (procession).
Such human gestures of solidarity, mutual-respect and understanding are essential to reclaim our common humanity and harmony.
This is what I strongly believe. pic.twitter.com/5PEGbMXksF
— Ovais Sultan Khan | اُویس | उवेस (@OvaisSultanKhan) April 14, 2022
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই ঘটনাগুলি বিপুল হারে প্রশংসিত হচ্ছে নেটমাধ্যমে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনার মত ভয়াবহ মহামারীর কারণে গত দুই বছর ধরে রামনবমীর অনুষ্ঠান ঠিকভাবে পালন করা যায়নি। তবে, চলতি বছর সংক্রমণের ব্যাপকতা হ্রাস পাওয়ায় ফের মহাসমারোহে পালিত হয় এই অনুষ্ঠান।